বেরোবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি, অচলাবস্থা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) কর্মচারী ইউনিয়ন (৪র্থ শ্রেণি) ১০ দফা দাবি আদায়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছে। কর্মবিরতির তৃতীয় দিন বুধবার সকাল থেকে কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসের শেখ রাসেল চত্বরে তাদের কর্মবিরতি শুরু করে। কর্মকর্তাদের এই কর্মবিরতি যাওয়ার ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বেরোবি’র একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।
কর্মকর্তাদের দাবিগুলো হচ্ছে, আগামী সিন্ডিকেটের আগে কর্মচারীদের নীতিমালা পাশ, চলতি মাসেই ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া পরিশোধ, দ্রুত পেনশন নীতিমালা বাস্তবায়ন, সাময়িক বরখাস্তকৃত কর্মচারীদের চাকরিতে পুনর্বহাল, দূরের কর্মচারীদের জন্য গাড়ি ও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা, কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতিকে লাঞ্ছিত করার ঘটনার বিচার করা, কর্মচারী নিয়োগ কমিটিতে কর্মচারী ইউনিয়নের প্রতিনিধি রাখা ও মাস্টাররোল কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী করা।
কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম জানান, আমরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতিদ্রুত আমাদের দাবি মেনে নেবে। অন্যথায় কর্মবিরতি চলতেই থাকবে।
এদিকে, উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) আমিনুর রহমানকে অব্যাহতি ও ডেপুটি রেজিস্টার গোলাম মোস্তফাকে সংস্থাপন শাখা থেকে অন্য দপ্তরে বদলিসহ ১১ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে বেরোবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। বুধবার কর্মবিরতির তৃতীয় দিনে সকাল ১০টা থেকে রেজিস্টার দপ্তরের সামনে অবস্থান নেয় তারা।
কর্মকর্তাদের ১১ দফার অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে, পদোন্নতি/আপগ্রেডেশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের স্থায়ীকরণ অবিলম্বে সম্পন্ন করা, যেসব কর্মকর্তার পদোন্নতি/আপগ্রেডেশন বোর্ড হয়নি তাদের বোর্ড দ্রুত সম্পন্ন করা, যেসব কর্মকর্তার পদবী বদল করা হয়েছে তাদের স্বপদে ফিরিয়ে আনা, সরকারি নিয়মে পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম প্রস্তুত করা, প্রতিটি দপ্তরকে নিজস্ব কাজ বুঝিয়ে দিয়ে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করা, প্রশাসনিক ভবনে কক্ষ বরাদ্দের নিমিত্তে যে কমিটি গঠিত হয়েছে তাতে জ্যেষ্ঠতার নীতি অবলম্বন করা, ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া বেতন পরিশোধ করা, হয়রানিমূলক বদলীকৃত কর্মকর্তাদের নিজ নিজ দফতরে পুনর্বহাল করা, রেজিস্টার কার্যালয়ে স্বতন্ত্রতা ও গোপনীয়তা রক্ষা করা এবং রেজিস্টার কার্যালয়ের অধীনস্থ কর্মকর্তার নজরদারি বন্ধ করা।
অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের বিশ্বাস উপাচার্য মহোদয় আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেবেন। অন্যথায় আমাদের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কমিলমউল্লাহ এবং রেজিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামালের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।