১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:২৩

পরিবহন খাতে কোটি টাকা নেওয়া হলেও কমছে না শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের বাস  © সংগৃহীত

বছরের পর বছর ধরে পরিবহন সেবার নামে শিক্ষার্থীদের কাছে কোটি টাকা নেওয়া হলেও, সেবা বঞ্চিত রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। কলেজের নিয়ম অনুযায়ী, ভর্তি ও সেশন ফি পরিশোধের সময় শিক্ষার্থীদের পরিবহন ফি জমা দিতে হয়। প্রত্যেকের কাছে পরিবহন ফি বাবদ আদায় করা হয় ৬০০ টাকা। তবে পূর্বে এই ফি তুলনামূলক কম ছিল বলে জানা গেছে।  

একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হওয়ার পর কলেজের ছাত্র সংখ্যা হিসেব করলে প্রত্যেক বছর পরিবহন খাতে জমা হয় প্রায় ১ কোটি দুই লাখ টাকা। এত টাকা জমা হলেও বাড়েনি সেবার মান। ২০১৯ সাল থেকে দুটি বাস ভাড়ায় চললেও বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকতে দেখা যায়। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নিয়মিত বাধ্যতামূলক পরিবহন ফি পরিশোধ করলেও বাস্তবে কোনো পরিবহন সুবিধা পাচ্ছে না তারা। বছরের পর বছর এই সমস্যার সম্মুখীন হলেও কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো সমাধান মেলেনি।

এদিকে ঢাবি অধিভুক্ত অন্যান্য কলেজগুলো লক্ষ্য করলে দেখা যায় তাদের ছয়টি সাতটি করে নিজস্ব বাস রয়েছে। কিছুদিন পর পর তারা নতুন নতুন বাস পাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অন্যান্য কলেজগুলো কিছুদিন পরপর নতুন বাস উপহার পাচ্ছে, আমাদের কলেজ প্রশাসন কি করছে? প্রতিবছর আমাদের কাছে থেকে পরিবহন খরচ বাবদ যত টাকা নেওয়া হয়, এগুলো দিয়ে এতদিনে প্রায় ৬ বা ৭ টা বাস কেনা যেত। আমি বলবো হয়ত কলেজ প্রশাসন অন্য কোন সুবিধা পাচ্ছে, এই কারণেই তারা শিক্ষার্থীদের অসুবিধাগুলো দেখতেছে না।’

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সেতু বলেন, ‘প্রত্যেকদিন সেই বনশ্রী থেকে গণপরিবহনে আসি। কতদিন দাঁড়িয়ে-বসে, মাঝে মাঝে ঝুলেও আসতে হয় ক্যাম্পাসে। আমাদের দুটি ভাড়া বাস থাকলেও কখনো চড়া হয়নি। বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে।’

ভোগান্তিতে থাকা আরেক শিক্ষার্থী বলেন,‘কলেজের পরিবহন সুবিধা যদি না-ই পাওয়া যায়, তাহলে আমাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয় কেন? তাহলে এই টাকা কোথায় যায়?প্রশাসনের উচিত দ্রুত এটার ব্যবস্থা নেওয়া ।’

বিষয়টি নিয়ে কলেজটির অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, মাঝে মাঝে ঝামেলার কারণে বাসগুলো বন্ধ রাখা হয়। পরীক্ষার কারণেও বাস বন্ধ থাকে।আবার অনেক সময় সকালে ছাত্র কম থাকায় আমাদের বন্ধ রাখতে হয়। কারণ অনেক বেশি ভাড়া পড়ে যায়। পরিবহন খাতের এত টাকা কোথায় যায় প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টাকা ব্যাংকে জমা থাকে, এটা অন্য কোথাও খরচ করা হয় না।’

শিক্ষার্থীদের টাকা দিয়ে বাস ক্রয়ের বিষয়ে বলেন, আমাদের নানা প্রতিবন্ধকতা থাকে। আমরা চাইলেই সবকিছু করতে পারি না। বাস কি কিনবো, একটা ছোট গাড়িই কিনতে পারি না। আমাদের মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে চলতে হয়। আমরা খুব চেষ্টা করছি বাস ম্যানেজ করার জন্য। আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করছি।