১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৫০

উপাচার্যের বাসভবনের গেট ভেঙে ঢুকলেন শিক্ষার্থীরা, সিন্ডিকেট সভা বাতিল

উপাচার্যের বাসভবনের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ  © সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে গোপন সিন্ডিকেট সভা আহ্বানের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা উপাচার্যের বাসভবনের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ায় সিন্ডিকেট সভা বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বাসভবনে সিন্ডিকেট সভার ডাক দেন উপাচার্য শুচিতা শরমিন। শিক্ষার্থীদের একটি অংশ উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুই শিক্ষক প্রতিনিধিকে সিন্ডিকেট থেকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসনের অভিযোগ তোলেন। এ ছাড়া পাতানো সিন্ডিকেট প্রতিহত করার ডাক দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এ সময় তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দেন। পরে বিকেলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। পরে সিন্ডিকেট সভা বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, শুক্রবার বিকেলে উপাচার্য যে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করেছেন, তাতে কোনো এজেন্ডা নেই। নিজের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিনি কোনো গোপনীয়তার সঙ্গে এ সভা আহ্বান করেছেন। তারা এই সিন্ডিকেট সভা মানেন না বলে দাবি করেন।

আরও পড়ুন: মায়ের সেবা করার মতো অ্যালামনাইরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেবা করবে: ইবি ভিসি

শিক্ষার্থীরা বলেন, কয়েক মাস আগে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ২২ দফা দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তারা পাতানো সিন্ডিকেট দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করতে চাচ্ছেন। এই পাতানো সিন্ডিকেট মানি না। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন।

শিক্ষার্থীদের ১০ দফা
শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবিগুলো হলো রেজিস্ট্রারের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ; অভ্যন্তরীণ শিক্ষকদের প্রতিনিধি করে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান; মেয়াদ শেষ না হওয়ায় বাতিল করা দুই শিক্ষককে সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা; ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রোডম্যাপ ঘোষণা; সিন্ডিকেটে ছাত্র প্রতিনিধি রাখার বিধান; সিন্ডিকেটের আলোচ্য বিষয় সাংবাদিকদের কাছে প্রকাশ করা; অবকাঠামো উন্নয়নে নিয়োগ পাওয়ার পর উপাচার্যের পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রমাণ সাপেক্ষে উপস্থাপন করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিঠি পাঠানো; স্বৈরাচারের দোসরদের সঙ্গে সখ্যের কারণ স্পষ্ট করে শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরে ক্ষমা প্রার্থনা এবং গত প্রশাসনে বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে যারা ছিলেন, তাদের নতুন পদ বণ্টন না করা ও শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন।

আরও পড়ুন: নতুন কমিটি গঠনের ঘোষণা জবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎই উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ শুরু করেন একদল শিক্ষার্থী। এই দাবিতে ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপাচার্যের বাসভবন ও তার কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা।