বেরোবির নাম পরিবর্তন নিয়ে আপত্তি মহিলা পরিষদের

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) গত সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) বেলা ১১টায় প্রধান ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা সাত দিনের মধ্যে নাম পরিবর্তন না হলে কমপ্লিট শাট ডাউনের ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, রংপুরের মানুষের দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল ছিল রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিল। পরে শেখ হাসিনা নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা দাবি করতে ২০০৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামফলক ও নাম পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) করে।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ নামে নগরীতে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়া বেগম রোকেয়ার নামে পায়রাবন্দে একটি সরকারি কলেজ, একটি হাইস্কুল ও নগরীতে একটি বালিকা বিদ্যালয়ও রয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহাল এবং শেখ হাসিনার নামে প্রতিষ্ঠিত একটি হলের নাম পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া হল করতে হবে।
এ বিষয়ে উপাচার্য ড. শওকাত আলী বলেন, ‘এ বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টাকে অবগত করা হয়েছে। তিনি বিষয়টাকে পজিটিভলি দেখেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরাও চাই নাম পরিবর্তন হোক।’
এরপর একই বিষয়ের দ্বিমত পোষণ করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। গত মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম অপরিবর্তিত রাখার দাবি জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০০৮ সালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। বাংলার নারী জাগরণের আলোকবর্তিকা, নারী শিক্ষার অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম রংপুরে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামটি রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের নামে নামকরণ করার মাধ্যমে নারী সমাজের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা ও দাবি বাস্তবায়ন করা হয়। সমাজের অবরোধ ভাঙার জন্য, নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য, নারীর মুক্তির জন্য আজীবন যে সংগ্রাম করে গেছেন তারই ফলশ্রুতিতে অজ লাখ লাখ নারী শিক্ষা, খেলাধুলা, জ্ঞান চর্চাসহ বিভিন্ন পেশায় এসে সমাজ ও দেশের জন্য অবদান রাখতে পারছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ বিষয় নিয়ে নানান আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী নিরপেক্ষভাবে অবস্থান নিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন হোক কারণ ফ্যাসিস্ট সরকারের যেমন সব স্থাপনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে তখন নামটা পরিবর্তন করাও জরুরি মনে হচ্ছে। তাহলেই আবু সাঈদের বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামী দোসর মুক্ত হবে।