তিতুমীর কী বিশ্ববিদ্যালয় হবে? যে আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহার শিক্ষার্থীদের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৭ PM , আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৭ PM

সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান। আগামী ৭ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাসের পর আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান, সরকারি তিতুমীর কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রাণী মন্ডলের উপস্থিতিতে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন তারা। এ সময় অধ্যক্ষ অনশনরত শিক্ষার্থীকে প্যাকেটজাত আমের জুস পান করান।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কথা বলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কলেজ শাখার যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামান।
তিনি বলেন, অনশনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরা সহানুভূতিশীল। তোমরা কলেজের সম্মান বাড়াতে যে কষ্টটা করছো এর প্রতিদান নিশ্চয়ই তোমরা পাবে। তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করছেন তা সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুইজন এসেছি। আমরা প্রায় দুই ঘণ্টা যাবত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।
আরও পড়ুন: তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার
সারাদেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বিশেষ করে ঢাকার। তোমরা রাস্তায় আছো, তোমাদের ব্যাপারে সরকার আন্তরিক। মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন তা জানানোর জন্য আমরা এসেছি।
কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সুস্পষ্ট ঘোষণা না দিলেও শিক্ষার্থীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির আশ্বাস দেন যুগ্মসচিব মো. নরুজ্জামান।
তিনি বলেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কোন কাঠামোতে হবে তা আলোচনা করে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা দ্রুত ওই সিদ্ধান্ত জানাবো।
জামি বরাদ্দ, নতুন বিল্ডিং ইত্যাদি শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল। কলেজের পাশে টিএনটি ও রাজউকের জমি আছে। সেগুলো যদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তিতুমীরকে দিতে পারলে সেখানে আবাসন সংকট মেটানো সম্ভব। আবাসন ও পরিবহন সংকট নিরসনে কার্যক্রম গ্রহণ করে আগামী সাত দিনের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি জানাবো। শিক্ষা মান বাড়তে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমানোর দাবির বিষয়ে আমরা ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা করবো।
তিতুমীর কলেজের আইন ও সাংবাদিকতা বিভাগ চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষা ক্যাডারে এ সাবজেক্ট নাই। এ দাবিটি আরও পর্যালোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
আরও পড়ুন: তিতুমীর কলেজে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দল
শিক্ষক সংকট নিরসনের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, আমরা আগামী সাত দিনের মধ্যে কলেজের পিএইচডি ডিগ্রিধারী ও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের পোস্টিংয়ের ব্যবস্থা করবো। ১৫২ জন শিক্ষকের পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া ছিল। এটি আরও ত্বরান্বিত করতে আমরা উদ্যোগ নেব।
তাদের আবাসনের ক্রাইসিস ও শিক্ষা মান বৃদ্ধির জন্য প্রিন্সিপাল মহোদয়ের নেতৃত্বে ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে একটি টিম গঠন করা হবে। তারা বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। তারা সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে আমাদের জানাবেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, সেমিস্টার সিস্টেমে পড়াশোনার কথা তোমরা বলছে। সেটি যদি সম্ভব হয় সেটিও আমরা পর্যালোচনা করবো। ইউজিসি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে যে কমিটি হয়েছে তাদের কাছে আমরা এ প্রস্তাব রাখবো। আমরা আশা করি, আমরা সবাই মিলে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবো। আমি আশা করি শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন।
প্রসঙ্গত, সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে বেশ কয়েকমাস ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে মিছিল, সড়ক-রেলপথ অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদান, ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়। তবে সম্প্রতি এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেয়ে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল থেকে দাবি আদায়ে আমরণ অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।