১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:২৩

তারুণ্যের পিঠা উৎসবে মেতেছে সোহরাওয়ার্দী কলেজ

পিঠা উৎসবে শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) সহযোগিতায় তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে পিঠা উৎসবে মেতে উঠেছিল সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। মাঘের শীতকে এক পাশে রেখে শিক্ষার্থীদের বানানো রকমারি পিঠার স্বাদ নিতে ক্যাম্পাসে উপস্থিত বিভিন্ন বিভাগ ও বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) কলেজ প্রাঙ্গণে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলি মুখোপাধ্যায়।

উদ্বোধনী বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ‘পিঠা উৎসব আমাদের শেকড়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। আমাদের লক্ষ্য তরুণ প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করা। তারুণ্যের পিঠা উৎসব এই প্রচেষ্টারই একটি উদাহরণ। এরকম আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ তৈরি করবে।’

পিঠা উৎসবে ২৫টি স্টলে প্রায় ৪০ প্রকারের বেশি পিঠার প্রদর্শনী ও বিক্রির আয়োজন করা হয়। নকশি পিঠা, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠাসহ নানা স্বাদের পিঠার ঘ্রাণে মুখরিত ছিল পুরো প্রাঙ্গণ। পিঠা প্রদর্শনী ও বিক্রির প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে কলজের ১৭ টি বিভাগসহ, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের একটি স্টল, সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতি (সোকসাস), বিএনসিসি, সেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন বাঁধন, রেডক্রিসেন্ট, গার্লস গাইড, লিও ক্লাব এবং রোভার স্কাউটস।

এসব স্টলে বিভিন্ন ধরনের পিঠা প্রদর্শিত হয়, যার মধ্যে ভাপা, চিতই, দুধপিঠা, পাটিসাপটা এবং নারকেল পুলির মতো ঐতিহ্যবাহী পিঠাগুলো উল্লেখযোগ্য। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই এসব স্টল সাজিয়ে পরিবেশন করেন পিঠার স্বাদ। শুধু পিঠার প্রদর্শনী নয়, উৎসবকে আরও রঙিন করে তোলে এক জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে নাচ, গান, আবৃত্তি ও নাটক পরিবেশন করেন শিক্ষার্থীরা।

পিঠা উৎসবে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ফিরোজ হাসান বলেন, এই উৎসব আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও মজবুত করেছে। পাশাপাশি, আমাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে এবং তা উদযাপন করতে পেরে আমরা গর্বিত। সেই সাথে এ ধরনের উৎসব তারুণ্যের মধ্যে ঐক্য ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা তৈরি করে। এটি আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকার একটি সুন্দর উপায়। 

আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘তরুণদের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া পিঠা সংস্কৃতির পুনর্জাগরণ করতেই এই উৎসব। ভবিষ্যতেও এমন আয়োজনের ধারা অব্যাহত থাকবে।’

উপস্থিত অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দারাও উৎসবের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ ধরনের উদ্যোগ আগামী প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্যকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মত দেন তারা।

এ অনুষ্ঠানে পিঠা প্রদর্শনী ও বিক্রির প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কলেজের বাংলা বিভাগ, দ্বিতীয় হয়েছে সমাজকর্ম বিভাগ এবং যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছে প্রাণিবিদ্যা ও গণিত বিভাগ। উৎসব শেষে বিভাগগুলোর হাতে পুরস্কার তুলেন কলেজের অধ্যক্ষ ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দরা। এসময় কলেজ প্রাঙ্গণ জুড়ে ছিল শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং দর্শনার্থীদের মুখে হাসির ঝিলিক। তারুণ্যের এই পিঠা উৎসব বাংলা সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে তারা আশা করেন। 

পিঠা উৎসবে তারুণ্যের উদ্দীপনায় মুখরিত ছিল সোহরাওয়ার্দী কলেজ ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং উদ্যোগ এই আয়োজনকে আরও বর্ণাঢ্য করে তোলে। তারুণ্যের প্রাণশক্তি ও সৃজনশীলতার মেলবন্ধন এ উৎসবকে বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে যুক্ত করেছে।