ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার থেকে ২০২৪ সালে হারিয়ে গেছেন যারা
মৃত্যু চিরন্তন সত্য। মানুষের জীবনের অন্তিম পরিণতি হচ্ছে মৃত্যু। এই মৃত্যু হতে পারে স্বাভাবিক, হতে পারে অস্বাভাবিক। স্বাভাবিক নিয়মে অনেকে ছেড়েছেন দুনিয়ায় মায়া। আবার জীবন নিয়ে প্রচন্ড হতাশায় স্বেচ্ছায়ও পৃথিবী ত্যাগ করেন অনেকে। বিদায় নিতে যাওয়া ২০২৪ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) পরিবার এমন অনেককেই হারিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম।
অধ্যাপক ড. আব্দুল মুঈদ: গত ১১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল মুঈদ খান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। তিনি অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বিশিষ্ট কলামিস্ট হিসেবে পরিচিত।
অধ্যাপক ড. নেছার উদ্দিন: অবসর শেষে আনুষ্ঠানিক বিদায়ের দিনই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. নেছার উদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন। এ বছরের ২১ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে ঢাকার নিজ বাসায় তিনি মারা যান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
অধ্যাপক ড. রুহুল আমীন: গত ২৫ নভেম্বর দুপুরে ঢাকায় ইন্তেকাল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমীন। তিনি দীর্ঘদিন ধরেঅসুস্থতায় ভুগছিলেন।
ড. আ ন ম ইকবাল হোসাইন: গত ৪ মে ব্রেইন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি অধ্যাপক ড. আ ন ম ইকবাল হোসাইন। ৪ মে রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা আহসানিয়া মিশন ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সামিয়া আক্তার ফুল: গত ১৪ মে বিরল ভাস্কুলাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের প্রথম স্থান অধিকারী শিক্ষার্থী সামিয়া আক্তার ফুল। ১৪ মে সকালে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি পাবনা সদর উপজেলায়। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়।
মনির হোসেন: গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শেষে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে বাড়ি ফেরার পথে কুষ্টিয়ার চৌড়হাস থেকে ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মনির হোসেন নিহত হন। দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্বার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
আদনান ফেরদৌস: ‘আমি হাত দিয়ে যা ছুঁই, তা দুঃখ হয়ে যায়’, এমন সুইসাইড নোট লিখে গত ৮ অক্টোবর আত্মহত্যা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আদনান ফেরদৌস। এদিন রাতে মানিকগঞ্জের নিজ বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
আরো পড়ুন: নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের পরিকল্পনা ও প্রত্যাশা
গোলাম আযম বিশ্বাস পলাশ: স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা গোলাম আযম বিশ্বাস পলাশ (৫৮)। গত ৪ অক্টোবর শুক্রবার দুপুরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আব্দুল জব্বার: অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শাখা কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার। গত ১৬ ডিসেম্বর ঝিনাইদহ শহরের কলাবাগান ৪ রাস্তার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তিনি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের হরিহরা গ্রামের বাসিন্দ।
আবু হানিফ: গত ১৭ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সিনিয়র মুয়াজ্জিন কাম সহকারী ইমাম মোহাম্মদ আবু হানিফ। সকাল সাড়ে ৮টায় নিজ বাড়িতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ ছিলেন তিনি।