পদোন্নতি নিতে সরকারিকরণ হওয়া ৬ শিক্ষকের তুঘলকি কাণ্ড
২০২১ সালের শেষের দিকে জাতীয়করণ হয়েছিল রাজধানীর লালমাটিয়া মহিলা কলেজ। এরপর কলেজটির শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্তীকরণ করা হয়। তবে সরকারি প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে আত্তীকরণ হওয়া কলেজটির ২৬ জন শিক্ষক হাইকোর্টে গেলে মাঝপথে ৬ জন এই আইনি লড়াই থেকে বের হয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। সর্বশেষ ২০ জন শিক্ষক চূড়ান্ত লড়াই শেষে কলেজে সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদানের অনুমতি পান।
অভিযোগ উঠেছে, আইনি লড়াইয়ের মাঝপথে রায় মেনে প্রভাষক পদে যোগদান করা ৬ শিক্ষক এখন চাচ্ছেন অবৈধ পদোন্নতি। তারাও সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদান করতে ২০ শিক্ষকের চূড়ান্ত রায় নিয়ে ঘুরছেন জনপ্রশাসনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে। জাতীয়করণ হওয়া কলেজের শিক্ষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এরকম কোনো নজির নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে শিক্ষা ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে সম্প্রতি আইনি লড়াইয়ে পদোন্নতি পাওয়া ২০ শিক্ষকের আইনজীবী একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। সেখানে অবৈধভাবে পদোন্নতির ক্ষেত্রে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে মতামত গ্রহণ করতে অনুরোধ করেছেন।
রাজধানীর লালমাটিয়া মহিলা কলেজকে সরকারিকরণ করে ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, ‘সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা-২০১৮’ এর আলোকে ঢাকা জেলার মোহাম্মদপুর থানাধীন লালমাটিয়া মহিলা কলেজ ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে সরকারি ঘোষণা করা হয়। যা ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করা হবে।
অভিযোগ রয়েছে, এই ৬ জন শিক্ষকের অবৈধভাবে পদোন্নতি পেতে পতিত সরকারের মন্ত্রী-আমালাদের অনুসারীরা মিলে জনপ্রশাসন ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে লবিং-তদবির করছেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও তাদের মন্ত্রী-এমপিদের দোসরদের এরকম কলকাঠি নাড়ায় উদ্বিগ্ন প্রকাশ করছেন ২০ জন শিক্ষক।
এ কারণে আইনি নোটিশে জাতীয়করণ হওয়া ৬ শিক্ষকের অবৈধ পদোন্নতি পেলে ৪টি সমস্যা/সংকট সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে-এরূপ অবৈধ আব্দারকে বৈধতা প্রদান করা হলে সরকারিকৃত প্রায় ৩২৬টি কলেজের শিক্ষকরা ঢালাওভাবে এ সুযোগ গ্রহণের চেষ্টা করবেন; লালমাটিয়া কলেজের আরও ৫৬ জন শিক্ষক এরূপ সুবিধা চাইবে; জাতীয়করণকালে বিগত সরকারের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত ও সুবিধা গ্রহণ করার জন্য আবেদন করবে, যা রাজনৈতিকভাবে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের পক্ষে যাবে; বিচার বিভাগের সুষ্পষ্ট নির্দেশনার বিষয়ে নির্বাহী বিভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে বিচার বিভাগের সিদ্ধান্ত অমান্য করার শামিল হবে যা পুনরায় বিগত সরকারের ন্যায় বিচার বিভাগের রায়কে অকার্যকর করার মাধ্যমে বিচারিক ব্যবস্থাকে হেয় করবে।
জানা যায়, ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয়করণ হয়েছিল রাজধানীর লালমাটিয়া মহিলা কলেজ। তারপর শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্তীকরণের সময় হাতেগোনা কিছু শিক্ষককে তাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা দেয়া হলেও একটা বড় অংশকে সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে বেতন অর্ধেক করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক বেতন-ভাতার দাবিতে ২০২২ সালে কলেজের ২৬ জন শিক্ষক হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ওই রিটের বিষয়ে শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং কর্মরত শিক্ষকদের নিয়ম অনুযায়ী বেতন-ভাতা দেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ লিভু টু আপিল দায়ের করেন।
আইনজীবীদের মতে, পক্ষত্যাগকারী শিক্ষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হলে তা খারাপ নজির তৈরি করবে। এটি সরকারের ৩২৬টি সরকারিকৃত কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে বিভ্রান্তি এবং বৈষম্যের সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, এর ফলে সরকারের আর্থিক ক্ষতিরও শঙ্কা রয়েছে।
এরপর আপিল বিভাগ বেতন-ভাতাদির বিষয়ে স্থিতাবস্থা জারির আদেশ দিয়ে হাইকোর্ট বিভাগকে রুলটি নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন। এরই মধ্যে জারি করা রুল শুনানি শেষে হাইকোর্ট তা খারিজ করে ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে রিটকারী শিক্ষকদের সবাইকে প্রভাষক পদে আত্তীকরণের নির্দেশ দেন।
পরবর্তীতে এই ২৬ জন শিক্ষকের মধ্যে ৬ জন (সম্পা দাস, শাহানা আফরীন লুনা, মীর ফাতিমা বেগম, কানিজ ফাতেমা, আফসারী খানম ও ফরিদা ইয়াসমীন) হাইকোর্টের আদেশ মেনে প্রভাষক পদে যোগদান করেন এবং সিভিল মিসেলেনিয়াস পিটিশন থেকে তাদের নাম প্রত্যাহার করেন।
তবে ওই রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে রিটকারী ২০ জন শিক্ষক লিভ টু আপিল করেন। গত বছরের ডিসেম্বরে আপিল বিভাগ তাদের পক্ষে রায় প্রদান করেন, যা শুধুমাত্র আপিলকারী ২০ জন শিক্ষকের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য প্রযোজ্য। আদালত তাদের মেধা ও ন্যায্যতা বিবেচনায় এই রায় দেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: লালমাটিয়া মহিলা কলেজ সরকারি হলো
রায়ে সুবিধাপ্রাপ্ত ২০ জন শিক্ষকের বিপরীতে অবস্থান করা ৬ জন শিক্ষক আদালতের রায় মেনে প্রভাষক পদে যোগদান করলেও বর্তমানে সমান (সহকারী অধ্যাপক) সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এজন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে তাদের ফাইল পাঠিয়েছেন তারা। এই ৬ জনের মোটামুটি সবাই আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপিতে আত্মীয়-স্বজন বলে জানিয়েছে কলেজের একটি সূত্র।
‘‘বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও আমরা একটি চিঠি পেয়েছি। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এখনও প্রসেসিং রয়েছে-জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. এরফানুল হক
ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে তাদের ফাইল চালাচালিতে সহযোগিতা করছেন পতিত সরকারের কিছু আমলা। এরমধ্যে রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহমুদুল হাসান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরুন আখতার অন্যতম।
অন্যদিকে আপিলকারী ২০ জন শিক্ষক ও তাদের আইনজীবীরা বলছেন, এই রায় এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। রায় বাস্তবায়ন হলে তারা সুবিধা পাবেন। এরমধ্যে বাকি ৬ জন প্রভাষক পদে জয়েনও করেছেন। তাদের এ ধরনের পদোন্নতি যদি বৈধতা পায়, তবে সরকারের অন্যান্য সরকারিকৃত কলেজের শিক্ষকরা একই দাবি তুলে বৈষম্যের পথ উন্মুক্ত করতে পারেন।
আইন অনুযায়ী, আত্তীকরণের পর সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি-১২ প্রযোজ্য হবে। এর অর্থ, প্রভাষক হিসেবে আত্তীকৃত হওয়ার পর শুধুমাত্র সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শর্তপূরণ সাপেক্ষে এবং সংশ্লিষ্ট পদে যোগ্যতা অর্জনের ভিত্তিতে পদোন্নতি সম্ভব।
তবে, উল্লিখিত ছয়জন শিক্ষক প্রভাষক হিসেবে আত্তীকৃত হওয়ার পর সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় জ্যেষ্ঠতা অর্জন করেননি এবং সরকার নির্ধারিত শর্ত পূরণ করেননি। একই সঙ্গে, তারা ফিডার পদ পূর্ণ করেননি, যা এই পদোন্নতির একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।
প্রভাষক হিসেবে আত্তীকৃত হওয়ার পর সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে দেশের কোনো আত্তীকৃত সরকারি কলেজে এই ধরনের দৃষ্টান্ত নেই। সুতরাং, আইন অনুযায়ী, এই ছয়জন শিক্ষকের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি আইনানুগ নয়।
এই ৬ শিক্ষকের ফাইল চালাচালিতে সহযোগিতাকারীদের একজন বর্তমানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিকল্পনা, পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান। তিনি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক আমলা ও নেত্রকোণা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। তিনি ও তার স্ত্রী বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়-১ অধিশাখা) নুরুন আক্তার তাদের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে তদবির করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আইনি লড়াইয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত ২০ জন শিক্ষকের একজন কলেজের সহযোগী অধ্যাপক জিন্নাত মাহমুদা। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে আমি এই লড়াইয়ে জয়ী হব। কারণ আমি নিজেকে যোগ্য মনে করি। সেই বিশ্বাস থেকেই আমি শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলাম।
সরে যাওয়া ৬ জন শিক্ষকের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওনারা তখন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটি ওনাদের বিষয়। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, তারাও সহকারী অধ্যাপক পদে যোগ্য। শিক্ষা মন্ত্রণালয় যদি মনে করে তাদের এই পদ দেওয়া যায়, তবে সেটি সম্পূর্ণ মন্ত্রণালয়ের বিবেচনার বিষয়। এটা মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত।
অবৈধ পদোন্নতি চাওয়াদের একজন শাহানা আফরীন লুনা। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের দাবিগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় যদি যৌক্তিক মনে করে তাহলে মেনে নেবে।
আইনজীবীদের মতে, পক্ষত্যাগকারী শিক্ষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হলে তা খারাপ নজির তৈরি করবে। এটি সরকারের ৩২৬টি সরকারিকৃত কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে বিভ্রান্তি এবং বৈষম্যের সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, এর ফলে সরকারের আর্থিক ক্ষতিরও শঙ্কা রয়েছে।
“আমি সেই শাখায় না থেকে কীভাবে কলকাঠি নাড়বো? আপনি শিক্ষা সচিবকে জিজ্ঞেস করুন, পদোন্নতিতে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা। এরপর উপদেষ্টা রয়েছে। অবৈধভাবে তারা কাউকে পদোন্নতি দেবেন কেন? আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনো ছোট্ট প্রমাণ দিতে পারলে, তখন কথা বলা যাবে-মো. মাহমুদুল হাসান, অতিরিক্ত সচিব স্থানীয় সরকার বিভাগ
একইসাথে আইনজীবীরা আরও জানান, ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মহামান্য আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী কেবলমাত্র ২০ জন আবেদনকারী শিক্ষকের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। পক্ষত্যাগকারী শিক্ষকদের এ রায়ের সুবিধা থেকে বাইরে রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আইনজীবী মো. তৌফিজ জামান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আপিল বিভাগ থেকে ২০ জন শিক্ষককে ৩ মাসের মধ্যে সহকারী অধ্যাপক পদে আত্তীকরণের আদেশ প্রদান করেন। আদালতের রায়ের পর আমরা কোর্টকে অনুরোধ করি এই মামলা থেকে নাম কর্তনকারী ৬ জন শিক্ষক যারা হাইকোর্টের রায় ও আদেশ মেনে নিয়ে নিজেদের প্রভাষক পদে কর্মরত ছিলেন। তারা ভবিষ্যতে এই রায়ের অপব্যাখ্যা করে বেআইনি সুযোগ লাভের চেষ্টা করে তাহলে এটি তাদের জন্য অনৈতিক হবে বলে আমরা আদালতকে জানিয়েছি।
এখন তারা যদি এই সুযোগ চান, তখন করণীয় কি? এমন প্রশ্নে তিনি জানান, যে কেউ তার দাবি তুলতে পারে। তারা যদি মনে করেন তারা দাবি তুলবেন তবে এতে আমাদের কিছু করণীয় নেই। সেটা বিজ্ঞ আদালত বিবেচনা করবেন তাদের দাবিটি কতটা যৌক্তিক। তবে আমি মনে করি, এটি আইনি প্রক্রিয়ায় নৈতিক কোন কর্মকাণ্ড হবে না।
অভিযোগ রয়েছে, এই ৬ জনের ফাইল চালাচালিতে সহযোগিতাকারীদের একজন বর্তমানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিকল্পনা, পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান। তিনি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক আমলা ও নেত্রকোণা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। তিনি ও তার স্ত্রী বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়-১ অধিশাখা) নুরুন আক্তার তাদের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে তদবির করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. মাহমুদুল হাসান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কলেজের পদোন্নতির বিষয়টি দেখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আমি সেই শাখায় না থেকে কীভাবে কলকাঠি নাড়বো? আপনি শিক্ষা সচিবকে জিজ্ঞেস করুন, পদোন্নতিতে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা। এরপর উপদেষ্টা রয়েছে। অবৈধভাবে তারা কাউকে পদোন্নতি দেবেন কেন? আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনো ছোট্ট প্রমাণ দিতে পারলে, তখন কথা বলা যাবে।
অন্যদিকে নুরুন আখতার বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা দেখি। এই শাখায় থেকে কলেজের নিয়োগ বিষয়ে কলকাঠি নাড়ার কোনো সুযোগ নেই। আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আইনি নোটিশটি জমা দেয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়টির সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. এরফানুল হকের কাছে। এ বিষয়ে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে জানান, এ বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও আমরা একটি চিঠি পেয়েছি। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এখনও প্রসেসিং রয়েছে বলে তিনি জানান।
এই ৬ জনকে পদোন্নতি দিলে জাতীয়করণ হওয়া সব কলেজে আগামীতে সমস্যা হতে পারে, বলছেন আইনজীবীরা, এই বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এটা একটা আইনগত বিষয়। আইনে যদি থাকে তাহলে তারা পদোন্নতি পাবেন, আর যদি আইন-বিধি অনুযায়ী তাদের দাবি অযৌক্তিক হয় তাহলে পাবেন না।
এক্ষেত্রে যদি সারাদেশে নতুন কলেজগুলোর বাকি শিক্ষকরাও দাবি করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একই নিয়ম সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। যদি আইন অনুযায়ী পাওয়ার যোগ্য হন তাহলে যে কারও দাবি বিবেচনা করা হবে।