বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা কলেজ ছাত্রশিবিরের পিঠা উৎসব
৫৪তম মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে পিঠা উৎসব ও শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রশিবির। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বেলা ৩টায় ঢাকা কলেজ টেনিস গ্রাউন্ডে এই কর্মসূচি পালন করেন কলেজ শাখার নেতৃবৃন্দ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মজ্ঞুরুল ইসলাম। এছাড়াও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সাদেক আব্দুল্লাহ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি আনিসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
পিঠা উৎসবে ১৯টি স্টলে বিভিন্ন বিভাগের স্টলগুলো বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিজ হাতে বাড়ি থেকে গ্রাম বাংলার নানা ধরনের পিঠা পুলি তৈরি করে নিয়ে এসেছে। সুজি, পাকানো, পুলি, হাড়ি, চিতই, ডিম, মোয়া, ভাঁপাসহ নানা রকমের পিঠা বিক্রি হচ্ছে স্টলগুলোতে।
পিঠা উৎসবে উদ্বোধনী বক্তব্যে শান্তিপূর্ণভাবে সকল দল মত নিজ নিজ কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, জুলাই বিপ্লবের পরে নতুন এই বাংলাদেশে বৈষম্য অনাচার না থাকে সেজন্য সকলকে ভূমিকা পালন করতে হবে। সকল বাংলাদেশিরা যেন সমভাবে সমান সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, পিঠা উৎসব বাঙালির ঐতিহ্য। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিনিয়ত এমন নান্দনিক ও সৃজনশীল অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছে। বিগত ১৫ বছরে ছাত্রশিবির নিয়মিত কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করতে পারিনি, বাধা দেওয়া হয়েছে। ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে ছাত্রশিবির তার নিয়মিত কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের ধরনের একটি আয়োজন করেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি সকল ছাত্র উৎসবমুখর পরিবেশে এ উৎসব পালন করছে। এর মধ্যে দিয়ে আমাদের সংস্কৃতির একটি দিক ফুটে উঠেছে। বিগত ১৫ বছরে আমরা ভিনদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসনে ছিলাম।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মজ্ঞুরুল ইসলাম বলেন, ১৬ ডিসেম্বর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। ৪৭ এর মূল মেসেজটি হল পাকিস্তান ও ভারতের সাথে বাংলাদেশের চিন্তা চেতনা, মূল্যবোধের অনেক পার্থক্য ছিল, সাংস্কৃতিক পার্থক্য ছিল। মূলত সেই কারণে নতুন একটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল। আমাদের এই দেশের মানুষ ইসলামকে এত বেশি লালন করে যাতে নিজেদের সংস্কৃতির সাথে ইসলামকে মিশিয়ে চমৎকার একটি বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে। সাংস্কৃতিক কারণে দেশভাগ হলেও স্বাধীনতার এত বছর পরে এসে আমাদের স্বাধীন কোনো সংস্কৃতি গড়ে উঠেনি। আমাদের সামনে আলাদা সাংস্কৃতিক বিধি বা নীতিমালা নেই। আমরা আমাদের জাতিকে উপহার দিতে পারি নাই। এটা আমাদের জন্য চরম এক ব্যর্থতা।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সুনির্দিষ্ট সংস্কৃতি দরকার। আমরা এমন কিছু চাই না যাতে করে আমাদের জাতিসত্তার ইতিহাস বিকৃত হয়। এমন কোনো সংস্কৃতি আমরা চাইনা যার মাধ্যমে আমরা আমাদের নিজেদের অস্বীকার করি। আমাদের সভ্যতা সংস্কৃতির সাথে ইসলাম, বিশ্বাস সব সময় মিশে থাকে। ২৪ এর আন্দোলনের পরে নতুন একটি চিন্তার ধারা আমাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে, এই প্রজন্মের তৈরি হয়েছে। স্বাধীন, বৈষম্যমুক্ত, ফ্যাসিবাদ মুক্ত, দাসত্বমুক্ত সেই কালচারের মধ্যে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য আল্লাহ আমাদের সেই তৈফিক যেন দান করেন।