বেরোবির বঙ্গবন্ধু হল ডাইনিং ‘হুটহাট’ বন্ধে ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা, উদাসীন প্রভোস্ট
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ডাইনিং চালু হওয়ার এক মাসের মধ্যে পূর্ব নোটিশ ছাড়াই ‘হুটহাট’ করে পরপর দুইবার বন্ধ রাখা হয়েছে। ডাইনিং হুট করে বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়তে হয় আবাসিক শিক্ষার্থীদের। এ জন্য হল প্রভোস্টের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন ভোগান্তির শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ।
জানা যায়, খাবারের গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ৬ নভেম্বর ডাইনিং পরিচালনার দায়িত্ব নেয় আবাসিক হলের তিন শিক্ষার্থী। ৬ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরপর দুইবার ডাইনিং বন্ধ রাখা হয় (২৭ নভেম্বর এবং ১৪ ডিসেম্বর)। হুট করে পূর্ব নোটিশ ছাড়া ডাইনিং বন্ধ হওয়ায় পার্শ্ববর্তী অন্য হল ও ক্যাফেটেরিয়ায় দ্বিগুণ চাপ পড়ছে। অনেকে আবার সেখানেও খাবার না পেয়ে চড়া দামে ক্যাম্পাস সংলগ্ন পার্কের মোড়ে বিভিন্ন হোটেলে খাচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফাহিদ মিয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু হল বন্ধ থাকায় সবাই এলাহী হলে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করি। তবে বেলা ১টার মধ্যে খাওয়া ফুরিয়ে যাওয়ার কারণে অনেককে বাইরে খেতে হয়। প্রভোস্ট এর অবহেলায় এমনটা হচ্ছে। অথচ ভিসি স্যার বলেছিল আমার প্রথম টার্গেট শিক্ষার্থীদের থাকা খাওয়ার পরিবেশ ঠিক করা। এগুলো ঠিক থাকলে বাকি পরিবেশ এমনিতেই ঠিক থাকবে।’
শিক্ষার্থী অলিউল ইসলাম বলেন, ডাইনিং বন্ধ থাকায় আমরা খাওয়ার কষ্ট পড়েছি। এমনিতেই হলে সকালের খাবার নেই তারপরও ডাইনিং বন্ধ হওয়ায় আমাদের দুপুর ও রাতের খাবার খেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে চড়া দামে খাবার খেতে হয়। বাহিরের খাবার মানসম্মত না হওয়ায় আমরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছি।
শাহরিয়ার রহমান বলেন, ‘হল মাঝে মাঝে বন্ধ হওয়ায় আমরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি। প্রতিদিনই ক্লাস কিংবা পরীক্ষা থাকায় আমরা হলে খাই। তা যদি একদিন পরপর বন্ধ হওয়ায়, খাওয়ার জন্য বাইরে দ্বিগুণ টাকা গুণতে হচ্ছে। আর অন্তত বন্ধ করার আগে একটা নোটিশ দেওয়া উচিত ছিল। এখন আমাদের বাহিরে গিয়ে খেতে হচ্ছে। আমরা আশা করছি হল প্রশাসন দ্রুত এর ব্যবস্থা নিবে।’
হলের শিক্ষার্থী মাহাবুর রহমান বলেন, ‘শুনেছি লস হওয়ার কারণে ডাইনিং বন্ধ রেখেছিল। কারণ হিসেবে বলতে পারি, বেশি শিক্ষার্থী এখানে খেতে ইচ্ছুক না। অন্যদিকে মুখতার এলাহিতে ভিন্ন চিত্র। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু হলের খাবারের মান, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে। এখানে রান্নার তেমন কোনো পরিবর্তন নাই, স্বাদে ভিন্নতা নাই, খাবারের বেশিসংখ্যক আইটেম নাই এবং অসতর্ক ভাবে রান্না করায় খাবারে বিভিন্ন কিছু পাওয়া যায়। প্রভোস্ট মহোদয় বিষয় গুলো বিবেচনায় নিয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।
ডাইনিং পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়া সাজিদুল ইসলাম জানান, মিল কম চলে যা তাদের পোষায় না। আর অধিকাংশ স্টুডেন্ট রান্না করে খায়, তাই বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে জাতির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট আমির শরীফ বলেন, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হচ্ছে সেটা আমরা নিজেরাও জানি। আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু যে শিক্ষার্থীরা ডাইনিং চালানোর দায়িত্ব নিয়েছে তাদের নাকি লস হয়ে যাচ্ছে সেজন্য তারা এ পর্যন্ত দুইবার ডাইনিং অফ রেখেছে। প্রথমবার লস হওয়াই আর দ্বিতীয়বার শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে ডাইনিং বন্ধ রেখেছেন। শিক্ষার্থীদের এই গ্রুপ ডাইনিং চালাতে না পারলে শীতের ছুটির পর ডাইনিং চালাতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের অপর এক গ্রুপের সাথে আমরা বসব।