সরকারি চাকরিতে বঞ্চনা, রুয়েট শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল (ইসিই) বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। বিভাগের নাম সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসিই বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে চারটি ব্যাচ স্নাতক সম্পন্ন করলেও, সরকারি চাকরির অধিকাংশ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে ইসিই বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হলেও পরবর্তীতে তা সরিয়ে ফেলা হয়। অন্যদিকে, কুয়েটের ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) এবং রুয়েটের ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের নাম নিয়মিতই সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্ভুক্ত থাকে।
বিভাগীয় প্রধান থেকে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি পাঠালেও তাতে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। শিক্ষার্থীদের দাবি হলো, সরকারি ইলেক্ট্রিক্যাল, কম্পিউটার, পাওয়ার ও কমিউনিকেশন সংশ্লিষ্ট চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে ইসিই বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করা এবং তাদেরকে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের সমতুল্য স্বীকৃতি দেওয়া।
দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ফারিয়া তাবাসসুম, ডিন অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তবে এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সুস্পষ্ট আশ্বাস দেওয়া হয়নি।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, ‘চাকরির ব্যবস্থা করতে না পারলে, ডিপার্টমেন্ট খোলার দরকার কী ছিল? এখন আমরা এতোগুলা শিক্ষার্থী যেই প্রত্যাশা নিয়ে এই ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়েছি, আমাদের ক্যারিয়ার জীবনের নিশ্চয়তা দেয়ার দায়িত্ব কে নেবে? আমাদের কারিকুলামে ইইই ও সিএসই এর শতকরা ৯০ ভাগ করে সিলেবাস অন্তর্ভুক্ত করার পরও আমরা সেসব বিভাগের সমতুল্য সেক্টরগুলোতে চাকরির আবেদন করতে পারছি না।’
ইসিইর বিভাগীয় প্রধান ফারিয়া তাবাসসুম বলেন, ‘বারবার বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করার পরও আমরা শিক্ষার্থীদের এই মৌলিক অধিকারটুকু পূরণ করতে পারিনি। আমরা এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
অপরদিকে ইসিই অনুষদের ডিন ড. মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তোমাদের একই সাথে দুইটি ডিপার্টমেন্টের মেজর কোর্সগুলো পড়তে হয়, এক্ষেত্রে তোমাদের দাবিগুলো অবশ্যই যৌক্তিক এবং এটি তোমাদের অধিকার। সার্কুলারে ইসিই বিভাগের নাম না থাকাটা জটিল এবং হতাশাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। আমি এ ব্যাপারে তোমাদেরকে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করার চেষ্টা করব।’