বিলুপ্তপ্রায় পুতুলনাচ-বায়স্কোপের দেখা মিলল শেকৃবি কৃষি মেলায়
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) নবান্ন উৎসব ও কৃষি মেলায় দেখা মিলেছে আবহমান কালের গ্রামীণ বাংলার সংস্কৃতি ও প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পুতুল নাচ ও বায়োস্কোপ। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের তৈরি নানা ধরনের পিঠার আসরও বসে মেলায়।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ক্লাব কর্তৃক আয়োজিত ‘নবান্ন উৎসব ও কৃষি মেলা ১৪৩১’ মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল বায়স্কোপ প্রদর্শনী এবং পুতুল নাচ। যা শিশুরা অতি আগ্রহের সাথে উপভোগ করছিল। এ ছাড়াও মেলায় ছিল শিক্ষার্থীদের তৈরি দেশীয় বিভিন্ন পিঠা, পায়েস, ফিরনি, আচার সহ নারী প্রসাধনী সামগ্রী। এছাড়াও কৃষি কাজে রাসায়নিক সারের বিকল্প ব্যবহার উপযোগী জৈব পদার্থের প্রদর্শনী, কৃষিতে ফসলের চিকিৎসা ও কৃষি পরামর্শ প্রদানের ডিজিটাল সেবাকেন্দ্র ‘ই-কৃষি ক্লিনিক’ এর কৃষি বিষয়ক পরামর্শ প্রদান স্টল।
শিক্ষার্থীদের তৈরি মুখরোচক পিঠা ও খাবারের মধ্যে পাটি শাপটা, দুধ চিতুই, দুধ পুলি, ক্ষীর-পায়েস, সিজি পিঠা, দিল্লি কা লাড্ডু, দই, ফিরনি বাহারি রকমের পেস্ট্রি কেক, আচার, বেনী পিঠা, ঝিনুক পিঠা, পাকানো পিঠা, ফুলঝুরি, শিম ফুল পিঠা, গুড়ের পায়েস, তাল পিঠা, কিমা পুরি, নারকেল পুলি, গাজরের সন্দেশ, মোহন পুরী, পান্ডুয়া, মাল পোয়া, শামুক পিঠা, পাস্তা, নুডলস অন্যতম। এছাড়াও ছিল নারীদের জন্য চুড়ি, আলতা, চিকলি, নাক ফুল, কানের দুল সহ নানা সাজন সামগ্রী।
মেলায় ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে আসা শেকৃবির শিক্ষক আখতার হোসেন বলেন, ‘এক দিনের এই মেলায় মন ভরে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গ্রামের মতো, গ্রামকে প্রতিনিধিত্ব করে। এই শহরে এক টুকরো গ্রাম৷ আমার সন্তানেরা এখানে না আসলে বুঝতো না এই নবান্ন টা আসলে কি। কাল আমার ছেলে আমাকে বলেছিল বাবা বায়স্কোপ টা আসলে কি। আমরা তাকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। আজ সে নিজে দেখল। এই পুতুল নাচ, এটা আসলে এই সময়ে এসে দেখা কি সম্ভব? এটা অত্যন্ত সুন্দর আয়োজন ছিল। আমাদের সন্তানেরা শহুরে ফাস্ট ফুড খেয়ে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য পিঠার নাম এগুলোও জানত না। আজ তার অনেক কিছুই দেখল। সব মিলিয়ে এমন সুন্দর আয়োজন আসলে একদিনে মন ভরে না।’
মেলার বিষয়ে জানতে চাইলে শেকৃবি কৃষি ক্লাবের সভাপতি ইমতিয়াজ বলেন, ‘আমরা শেকৃবি কৃষি ক্লাব থেকে এই মেলার আয়োজন করেছি, যেহেতু কৃষি এবং নবান্ন একে অপরের পরিপূরক। এখানে শিক্ষার্থীদের পিঠা নিয়ে বিভিন্ন স্টল স্থান পেয়েছে। কৃষি বিষয়ক দুটি কোম্পানির স্টল রয়েছে। পাশাপাশি আমরা বায়স্কোপ, পুতুলনাচ ও কালচারাল প্রোগ্রামের আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে আমরা গ্রামবাংলা এবং কৃষি ও নবান্নের যে আমেজ তা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’