০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১২

কুবিতে ২ হাজার শিক্ষার্থীর ফ্রি খিচুড়ি ভোজ, অর্থের সংস্থান নিয়ে প্রশ্ন!

ব্যানার   © সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য খিঁচুড়ি ভোজ ও ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করতে যাচ্ছেন কয়েকজন সমন্বয়ক। তবে অর্থের সংস্থান ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে সমন্বয়কদের মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।

আজ শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে এ অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা রয়েছে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এমন আয়োজন তাদের ভুল হয়েছে বলে জানিয়েছেন খিচুড়ি ভোজের প্রধান আয়োজক। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবদুল হান্নান জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাথে আমি শুরু থেকেই সক্রিয়ভাবে ছিলাম। কিন্তু কখনো কোনো পদের জন্য আগ্রহী ছিলাম না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আজকে একটা প্রোগ্রাম হওয়ার কথা রয়েছে। খিঁচুড়ি ভোজ এটা আহতদের সাথে মস্করা করা। যেখানে আহতরা এখনো বেডের মধ্যে কাতরাচ্ছে, সুচিকিৎসা করা যাচ্ছে না, এগুলো হচ্ছে আহতদের সাথে মস্করা করা। সব প্রোগ্রাম আমি থাকলেও আজকের প্রোগ্রাম আমি বয়কট করলাম। 

তিনি আরও বলেন, সবাই এটা নিয়ে প্রশ্ন করছে যে, অর্থ কোথা থেকে আসছে। তবে আমি জানতে পারছি আওয়ামী লীগের আমলের একজন কাউন্সিলর, কুমিল্লার, উনার থেকে টাকাটা আসছে। তার কাছ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টাকা নেওয়ার বিষয়টি মানা যায় না। আমি আমার জায়গা থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। 

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও খিঁচুড়ি ভোজের জন্য ২ লাখ ৪০ হাজার টাকার বাজেট করেছে সমন্বয়ক জান্নাতুল। এতে দেড় লাখ টাকা দিয়েছেন কুমিল্লার সাবেক কাউন্সিলর গোলাম কিবরিয়া। বাকি অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সমন্বয়করা। 

মাহমুদ আল আমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, সমন্বয়কদের একজন দাবি করেছেন ওনারা বাইরে ঘুরাঘুরি করে টাকা তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভুঁড়ি ভোজের আয়োজন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কি কাউকে বলেছে বাইরে থেকে টাকা তুলে এনে আমাদের কে ফ্রি তে খাওয়ান? কি আজব চিন্তাভাবনা!

অর্থ প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক কাউন্সিলর গোলাম কিবরিয়া তিনি সাংবাদিক পরিচয় জানতে পারলে পরে কথা বলবেন বলে প্রতিবেদকের কল কেটে দেন। 

তবে সমন্বয়ক জান্নাতুল ফেরদৌস ইভা জানান, আয়োজনের জন্য আমি ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বাজেট করেছিলাম। পরে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম আমাদের কাছে দেড় লাখ টাকা পাঠিয়েছেন কাউন্সিলর গোলাম কিবরিয়ার মাধ্যমে। আমি বলেছিলাম উনাকে এমন কারো মাধ্যমে টাকা পাঠান যাতে আমরা টাকা তুলতে পারি। তখন তিনি উনার মাধ্যমে আমার কাছে টাকাটা পাঠায়। 
তবে সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম কোথায় থেকে অর্থ সংগ্রহ করেছেন এ বিষয়ে প্রশ্ন করলেন তিনি জানেন না বলে জানান। 

তিনি আরও জানান, এটা মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে না। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে। হয়ত আমরাও যুক্ত আছি এবং ভুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হয়ে গিয়েছে। আর আমরা চেয়েছিলাম নিজেদের মধ্যে বন্ডিংটা করতে, যাতে যেকোনো মুহূর্তে একজনকে ডাকলে সবাই আসতে পারে যেকোনো বিষয় মোকাবেলা করার জন্য। তখন এখানে প্রশ্ন আসে প্রোগ্রামের নাম কি হবে? তখন তরিকুল ভাই বলছে, যেহেতু ভারতের বিষয়টা সামনে আসছে, তো এটা দিতে পারো যে, ‘ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও খিচুড়ি ভোজ’। 

তবে অর্থের সংস্থান নিয়ে জানতে সমন্বয়ক তরিকুল ইসলামকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।