০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০১

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে যা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ  © সংগৃহীত

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি বৈষম্যমূলক ও জটিল বলে দাবি করে আসছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি তারা গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে। আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ও এ সিদ্ধান্ত নেয়ার পথে হাটছে। এর পরই শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য গুচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যবস্থা অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

রবিবার (১ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গুচ্ছভুক্ত সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) বরাবর পাঠানো চিঠির মাধ্যমে তিনি এ আহ্বান জানান।

চিঠিতে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ইতোপূর্বে আপনাকে লেখা আমার একটি চিঠিতে দেশের শিক্ষাঙ্গনে নানান অস্থিরতা বিরাজমান থাকার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু করণীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেছি। আমি জানি এটা সহজ কাজ নয় এবং আপনি ও আপনার সহকর্মীরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। এ প্রেক্ষাপটে আমরা মনে করছি যে, বর্তমানে প্রচলিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসলে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে উপাচার্যরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভায় এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য একত্রিত হয়েছিলেন। দেখা গেছে যে, গুচ্ছ পরীক্ষার পক্ষে-বিপক্ষে বিবিধ যুক্তি আছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজনে এ পদ্ধতির সংশোধন করারও সুযোগ থাকবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতে থাকলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হবে।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ইতোমধ্যে অভিভাবক ও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গুচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতি বহাল রাখার পক্ষে স্মারকলিপিও পেয়েছি। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য গুচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতিতে ভর্তির ব্যবস্থা অনুসরণ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে আপনাকে সবিনয় অনুরোধ করছি।

এর আগে গত ২৭ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তিতে গুচ্ছ পদ্ধতির বিষয়ে জরুরি বৈঠক করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই বৈঠকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী বেশি এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং তুলনামূলক নতুন প্রতিষ্ঠিত ও জনবল কম থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ পদ্ধতি রাখার পক্ষে অবস্থান নেন। ফলে কোনরকম চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়।

বৈঠক শেষে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের ধারণা, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এরই মধ্যে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, তাদের আর গুচ্ছ পদ্ধতিতে ফেরার সম্ভাবনা নেই। ফলে তুলনানমূলক নতুন ও ছোট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বয়ে একটি গুচ্ছ থাকতে পারে।

প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি ও খরচ কমাতে এ উদ্যোগ নিয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। গত কয়েক বছর ধরে দেশের ২৪টি সাধারণ ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে জিএসটি গুচ্ছ, তিনটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে প্রকৌশল এবং ৯টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কৃষি গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। গুচ্ছ পদ্ধতিতে অনেকের আপত্তি থাকলেও এটিকেই তুলনামূলক ভালো পদ্ধতি বলে মনে করছেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। এ পদ্ধতি রাখার দাবি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা।