২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:২৮

ইরাসমাস মুন্ডাস বৃত্তি পেয়ে বেলজিয়াম যাচ্ছেন মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থী শায়লা

শায়লা হক  © টিডিসি

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্স (এফটিএনএস) বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শায়লা হক ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও জনপ্রিয় একটি স্কলারশিপ ইচ্ছে ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ পেয়ে মাস্টার্সের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বেলজিয়ামের কেইউ লিউভেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউরোপিয়ান মাস্টার অব সাস্টেইনেবল ফুড সিস্টেম ইন্জিনিয়ারিং টেকনোলজি অ্যান্ড বিজনেস প্রোগ্রামে মাস্টার্স করতে নির্বাচিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও জনপ্রিয় একটি স্কলারশিপ ইচ্ছে ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপে শতভাগ টিউশন ফি ওয়েভার, দুেই বছর প্রতি মাসে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ ইউরো উপবৃত্তি, যাতায়াত ভাতা ও সেমিস্টার শেষে এক দেশ থেকে অন্যত্র যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক বিমানের টিকেট সুবিধা দেয়।

শায়লা হক বলেন, ‘সবকিছুর জন্য মহান আল্লাহতালার প্রতি কৃতজ্ঞ। ধীরে ধীরে বড় হওয়ার সাথে সাথে বাইরে উচ্চশিক্ষার জন্য পড়তে আসার ইচ্ছা প্রবল হতে থাকে। যদিও খুব বেশি পড়ুয়া স্টুডেন্ট কখনোই ছিলাম না। এইচএসসি পর্যন্ত লেখাপড়ার ধরন মোটামুটি নিয়মিত ছিল (দৈনিক ৫-৬ ঘণ্টা)। সবার কাছে গল্প শুনতাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি লেখাপড়া করা লাগে না তাই ক্যাম্পাস লাইফের প্রথম ২-৩ সেমিস্টার খুবই কম লেখাপড়া করেছি যার ফলাফল ব্যাচেলরে কম সিজিপিএ ২-৩ সেমিস্টারে ফলাফল ভালো না হলে যেতোই চেষ্টা করা হোক না কেন খুব বেশি ভালো করা সম্ভব না।’

আরও পড়ুন: ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপে আবেদনের জন্য প্রাথমিক তথ্য জেনে নিন

তিনি বলেন, ‘আমার এই উচ্চশিক্ষার জার্নিতে কিছু শিক্ষকের সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা সব সময় ছিল। আমি মাঝেমধ্যে হতাশ হয়ে গেলেও তারা আমাকে বকা দিয়ে হলেও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে আমার লক্ষ্য কোথায়? বাবা-মা বা পরিবারের কেউ কখনোই আামাকে আমার স্বপ্নের পিছনে এগিয়ে যেতে বারণ করেন নাই বরং নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেয়ার স্বাধীনতা দিয়েছেন। তাদের আমার প্রতি এই বিশ্বাস আমার জীবনের সব থেকে বড় অনুপ্রেরণা।  আমার এই সাধারণ জীবনে ক্ষুদ্র কিছু প্রাপ্তি আছে। যার পিছনে অনেক বড় অবদান আমার দুই বোনের।’

শায়লা হকের জন্ম ও বেড়ে ওঠা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তার বাবা সিরাজুল হক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী ও মা মানজিরা হক গৃহিণী। এক ভাই, দুই বোন। তিনি পঞ্চম শ্রেণিতে এবং অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান। নামোশংকর বাটী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ফাইভ নিয়ে এসএসসি সম্পূর্ণ করেন  এবং নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে ফাইভ নিয়ে এইচএসসি সম্পূর্ণ করেন। উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ফুড টেকনোলজি এন্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্স বিভাগে  ভর্তি হন। অনার্সে সিজিপিএ ৩.৬৪ এবং মাস্টার্সে সিজিপিএ ৩.৮১ লাভ করেন।

প্রসঙ্গ, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাস্টার্স ও জয়েন্ট মাস্টার্সে পড়াশোনার সুযোগ দেয় ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ। ১৯৮৭ সালে শুরু হয়ে এটি বিগত ৩০ বছরে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং সম্মানজনক শিক্ষাবৃত্তি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।