১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১৬:০১

বাসে ইবি ছাত্রীকে হেনস্তা, থানায় মুচলেকা দিয়ে মুক্তি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)  © ফাইল ফটো

কুষ্টিয়া শহর থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে পাবলিক বাসে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম জুয়েল আহমেদ রাজু (৪৫)। সে ঝিনাইদহ জেলার আরাপপুরের মৃত মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে। ভুক্তভুগী ছাত্রী হেনস্তার বিষয়টি তার বন্ধুদের জানালে তারা অভিযুক্তকে আটক করে থানায় সোপর্দ করে। 

গতকাল সোমবার রাতে কুষ্টিয়া থেকে খুলনাগামী রূপসা বাসে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) অভিযুক্ত রাজুর চাচা ঝন্টু মিয়া এসে পরবর্তীতে এধরনের কর্মকাণ্ড আর করবেনা মর্মে মুচলেকা দিয়ে রাজুকে ছাড়িয়ে নেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মানবিক দৃষ্টিতে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভুগী ছাত্রী রূপসা বাসে ক্যাম্পাসে ফেরার সময় পাশের সীটে অভিযুক্ত ব্যক্তি বসছিল। ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করাসহ মুখের মাস্ক খুলতে বলা, টিকিট দেখাতে বলা, হাতের আংটি ধরতে চাওয়া এবং ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে নেমে ওই ছাত্রীকে অনুসরণ করে উত্ত্যক্ত করছিল অভিযুক্ত ব্যক্তি রাজু। পরে ভুক্তভোগীর কয়েকজন বন্ধু ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তকে মারতে উদ্যত হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির উপক্রম হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা গিয়ে অভিযুক্তকে আটকে থানায় হস্তান্তর করে।

আরও পড়ুন: এ মুহূর্তে সবচেয়ে অ্যাক্টিভ হওয়ার দরকার ছিল স্বাস্থ্য উপদেষ্টার: সারজিস

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজু বলেন, আমার টিকিটটা খুঁজে পাচ্ছিলাম না, মেয়ের হাতের টিকিটটা আমার মনে হয়েছিল তাই টিকিট দেখাতে বলেছি। মেয়েটি যখন বাস থেকে নেমেছে তখন জিনিসপত্রের ব্যাগটা খুব ভারী হওয়ায় সন্দেহ লাগছিল তাই জিজ্ঞেস করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেইটে নামলে কয়েকজন এসে মারে। 

টিকিট চেক করা কিংবা সন্দেহ করার এখতিয়ার রাখেন কিনা জিজ্ঞেস করলে বলেন, এটাই আমার ভুল হয়েছে। আল্লাহকে বিচার দিলাম। আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি আর এরকম করব না এবং এখানেও আসব না।

অভিযুক্তের চাচা ঝন্টু জানান, মা-বাবা স্ত্রী হারিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে গেছে। বছরে ১৫ থেকে ২০ দিন মাতাল হয়ে যায়। বেঁধে রাখতে হয়। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব বেঁধে রেখে কিংবা ভালো মানের চিকিৎসা করাতে। 

ইবি থানার এসআই মেহেদী হাসান জানান, শিক্ষার্থীরা তাকে থানায় হস্তান্তর করলে বিস্তারিত ঘটনা জেনেছি। ভুক্তভোগী কোনো লিখিত অভিযোগ না দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে মুচলেকা নিয়ে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, মেয়ে যেহেতু অভিযোগ দেয়নি সুতরাং ক্ষমা করে দিয়েছে। থানায় বিষয়টা অবহিত করে তাদের আইনী নিয়মানুসারে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে বলছিলাম। থানা থেকে তখন বললো অভিযোগ না পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া যায় না, বরং মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিতে হয়। তাই বললাম তাহলে অভিভাবক ডেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিতে।