বিতর্কিত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে চান না শিক্ষার্থীরা
বিতর্কিত ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল এমন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে চান না জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, এমন দলকানা ও সমালোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সেখানে মনোনয়ন দেয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় হবে অপরাজনীতির আখড়া। বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি শিক্ষা উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেয়ার কথা রয়েছে।
জানা যায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা পদত্যাগ করতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ আগস্ট পদত্যাগ করেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর৷ ড. সৌমিত্রের পদত্যাগের পর বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলমকে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় রদবদল করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে শিগগির সিন্ডিকেট সদস্যদের বিষয়েও পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তবে অভিযোগ রয়েছে, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে নিজেকে অধিষ্ঠিত করতে তৎপর রয়েছে বিএনপির ময়মনসিংহ জেলা দক্ষিণের আহ্বায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটনসহ আরও অনেক বিতর্কিত রাজনৈতিক নেতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, রাজনৈতিক নেতারা এর আগেও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। তখন তারা দলের প্রভাব খাটিয়ে শত শত অবৈধ নিয়োগদানে তৎকালীন উপাচার্যকে কোণঠাসা করে রেখেছিলেন।
লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের সাবেক এক শিক্ষার্থী বলেন, এখন আমরা একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। সেখানে দলকানা ও সমালোচিত একজন ব্যক্তির সিন্ডিকেট সদস্য হওয়ার গুঞ্জন শুনছি। এটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কখনোই ইতিবাচক হবে না। রাজনৈতিক কেউ আসলে এই বিশ্ববিদ্যালয় হবে অপরাজনীতির আখড়া।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের একাধিক শিক্ষক বলেন, আমরা সৎ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে চাই। যারা আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সত্যিকারের উন্নয়ন হবে, শিক্ষা ও গবেষণাক্ষেত্রে উৎকর্ষ সাধিত হবে। রাজনৈতিক নেতাদের অনুসারীরা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইতিমধ্যে উৎপাত শুরু করে দিয়েছে। তারা প্রশাসনিক কাজে বাধা সৃষ্টি করছে। তারা অর্থের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনও করছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পাসে পোস্টারিং হয়েছে শুনেছি। তবে বিস্তারিত জানি না। এরকম কেউ যদি আসলেই থেকে থাকেন তাহলে তাকে সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হবে কিনা সেটা আগে আমরা ভেবে তারপর সিদ্ধান্ত নেবো।