হাবিপ্রবির দেওয়াল জুড়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের ভাষা
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) এর দেওয়ালগুলোতে ফুটে উঠেছে নতুন রূপে গ্রাফিতির অনন্য শৈল্পিক প্রতিভা। শিক্ষার্থীদের তৈরি এসব গ্রাফিতি শুধু দৃষ্টিনন্দন চিত্রকলা নয়, বরং এগুলো বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক বার্তা বহন করে চলেছে।শিক্ষার্থীরা তাদের অনুভূতি, প্রতিবাদ, এবং স্বপ্নগুলো তুলে ধরেছে বিভিন্ন চিত্রকর্মের মাধ্যমে।
জিমনেশিয়ামের সামনে গেলেই চোখে পড়ে, "কণ্ঠ হোক মুক্তির হাতিয়ার" শিরোনামে একটি দৃশ্য। এখানে একজন শিক্ষার্থীর মুক্তির আকাঙ্ক্ষা ও বাংলাদেশে চলমান আন্দোলনের প্রতীকী রূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ছবিটি বাংলাদেশে ছাত্র-আন্দোলন বা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ধারণা নিয়ে তৈরি।
তারই পাশে ফুটে উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেবা ও মানবিকতার প্রতীক হিসেবে রেড ক্রিসেন্টের ভলান্টিয়াররা আহত বা অসুস্থ ব্যক্তিকে বহন করছে। এটি সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এবং সাহায্যের হাত বাড়ানোর বিষয়টি তুলে ধরে।
আরেকটি দেয়ালে বলা হয়েছে, "মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম", যেখানে শিক্ষার্থীদের দৃঢ়তার প্রতীক হিসেবে মুষ্টিবদ্ধ হাতের ছবি আঁকা হয়েছে, যা দেশপ্রেম এবং দেশকে রক্ষার মনোবলকে প্রকাশ করে। এছাড়াও আরও অনেক গ্রাফিতিতে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগ্রামের বিভিন্ন দিক ফুটে উঠেছে।
আনিকা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, এই গ্রাফিতিগুলো আমাদের জন্য শুধুই চিত্রকর্ম নয়, বরং এটা আমাদের স্বপ্ন, আমাদের সংগ্রাম, আর আমাদের কণ্ঠস্বর। আমরা এখানে শুধু পড়াশোনা করতে আসিনি, বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এসেছি। এসব ছবি আমাদের সবার মনের কথা বলে
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এই দেওয়ালগুলো যেন আমাদের গল্প, আমাদের যন্ত্রণা, আমাদের প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি। আমরা যারা এই ক্যাম্পাসের অংশ, আমাদের প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা, আমাদের প্রত্যাশা, সবকিছুই মিশে গেছে এই গ্রাফিতিগুলোতে। এই ছবি শুধু আর্ট নয়, এটা আমাদের মনের ভাষা, আমাদের চিন্তার প্রকাশ। হাবিপ্রবি যেন এক মুক্ত মঞ্চ, যেখানে আমরা আমাদের অনুভূতিগুলো স্বাধীনভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারি।