তিন মাস পর ইবিতে সশরীরে ক্লাস শুরু, উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা
দীর্ঘ তিন মাস বন্ধের পরে সশরীরে ক্লাসে ফিরেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন পর ক্লাসে ফিরতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তারা।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগে আনুষ্ঠানিকভাবে সশরীরে ক্লাস শুরু হয়েছে।
জানা যায়, ইবিতে গত ৬ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত গ্রীষ্মকালীন অবকাশ ও ঈদুল আজহার দেওয়া হয়৷ ছুটি শেষে দুইদিন ক্লাস চলার পর ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলন শুরু হয়। এসময় তারা সকল ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয়। এরই মাঝে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পৃথক আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইবিতেও বন্ধ হয়ে যায় সকল একাডেমিক কার্যক্রম। পরবর্তীতে ৫ আগস্টে হাসিনা সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের পদত্যাগের ফলে সশরীরে ক্লাস চালু করা সম্ভব হয়নি৷ সবশেষে ৮৪ দিন পর শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ বন্ধ ও আন্দোলন সংগ্রামের কারণে তাদের পড়াশোনায় ঘাটতি হয়ে গেছে। তারা শিক্ষা কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে গেছেন। তাই অনেকদিন পরে ক্লাসে ফিরতে পেরে আনন্দিত তারা। এছাড়াও অনেকদিন পরে বন্ধুদের সাথে দেখাসাক্ষাৎ ও আড্ডায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে তাদের মধ্যে থাকা একঘেয়েমি ভাব কেটে যাবে বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: ইবির একাডেমিক কার্যক্রম স্থবির, বছর ছাড়িয়েছে সেশনজট
অর্পিতা গোস্বামী প্রমা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, অনেকদিন বাড়িতে থেকে থেকে একঘেয়েমি ভাব চলে আসছিলো। কতদিন বন্ধু বান্ধবীদের সাথে একসাথে আড্ডা দিতে পারিনি। দীর্ঘ বিরতির কারণ বন্ধুদের মাঝেও সম্পর্কের ভাটি পরেছে। পড়াশোনাও তেমন হয়নি। তাই বহু প্রতিক্ষার পরে ক্লাসে এসে একটু অন্যরক আনন্দ লাগছে। সকলের সাথে সরাসরি কথা দেখা হওয়ায় ভালো লাগছে। আমি চাই আমাদের ক্লাস পরীক্ষায় যেন আর কোনো সমস্যা তৈরি না হয়।
আনিসুর রহমান নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ঈদ ও পরবর্তী গণঅভ্যুথানে প্রায় ৮৪ দিন পর ক্লাসে ফিরতে পেরে খুব ভালো লাগছে। একদিকে, দীর্ঘ বিরতির পর সহপাঠীদের সঙ্গে আবার দেখা হওয়ার আনন্দ ও উত্তেজনা থাকে, ক্লাসরুমের চেনা পরিবেশ ফিরে পাওয়ার একটা স্বস্তি কাজ করে। অন্যদিকে, এতদিনের ছুটির পর পড়াশোনার ছন্দে ফেরাটা একটু কঠিনও হতে পারে। ফাঁকা রুটিন থেকে হঠাৎ ব্যস্ততায় ফেরা কিছুটা চাপের মনে হলেও, একইসাথে নিয়মিত জীবনে ফেরা এক ধরনের স্বাভাবিকতা এবং উচ্ছ্বাস নিয়ে আসে।