১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩:৫৩

৮ দফা দাবিতে ইবির জিওগ্রাফি এন্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগে স্মারকলিপি প্রদান

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওগ্রাফি এন্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগের নাম পরিবর্তন, সেশনজট নিরসন এবং নির্দিষ্ট সময়মতো ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া সহ ৮ দফা দাবিতে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় বিভাগের ২০১৯-২০ সেশন থেকে ২০২২-২৩ সেশন পর্যন্ত প্রতিটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা, ইবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেন জিওগ্রাফি এন্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের  সভাপতি মোঃ ইনজামুল হকের কাছে। 

 এসময় দীর্ঘদিন সেশনজটে জর্জরিত থাকলেও জট নিরসনে বিভাগের পক্ষ থেকে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ করে তারা। 

শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ হচ্ছে - সেশনজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ সেশনের চলতি সেমিস্টারের ল্যাব ও থিওরির ক্লাস ০৫ অক্টোবরের মধ্যে এবং পরীক্ষা ২৮শে অক্টোবরের মধ্যে শেষ করতে হবে। পরবর্তী সেমিস্টার গুলো ৩ মাস করার পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রদান করতে হবে; ক্লাস রুটিনের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট সময়ে ক্লাস নিশ্চিত করতে হবে; ক্লাসের নামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা যাবে না, শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময় নষ্ট না করে রুটিন মাফিক অনলাইন-অফলাইন ক্লাস, ল্যাব ও পরীক্ষা নিতে হবে; প্রত্যেক শিক্ষককে সুনির্দিষ্ট সময়ে ক্লাস শেষ ও পরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। অবৈধভাবে স্বাক্ষর গ্রহণের মাধ্যমে বিভাগের নাম পরিবর্তন করা হয়েছিল, সিংহভাগ শিক্ষার্থীর সম্মতিক্রমে বর্তমানে সময়োপযোগী নাম পরিবর্তনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ন্যূনতম ১৫ দিন পূর্বে রুটিন প্রকাশ এবং ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করে দ্রুততম সময়ে মানোন্নয়ন এবং রিটেক পরীক্ষা শুরু করতে হবে। ফিল্ড ওয়ার্কে বিভাগ হতে সম্পূর্ণ অর্থের অন্তত ত্রিশ শতাংশ বরাদ্দ রাখতে হবে। ক্যারিয়ার ভিত্তিক গবেষণা, থিসিস, উচ্চশিক্ষা, চাকুরি ও বিনিয়োগ বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান এবং সহানুভূতিশীল মনোভাব প্রকাশ করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের বিভাগের কার্যক্রম ১৭/১৮ সেশন থেকে চালু হলেও অবাক করা বিষয় এখন কোন ব্যাচ মাস্টার্স শেষ করে বের হতে পারেনি। অথচ দিনের পর দিন নানা কারণে সেশনজট বাড়লেও তা নিরসনে বিভাগের কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। শিক্ষকরা ক্লাস পরীক্ষার নামে দিনের পর দিন শিক্ষার্থীদের সাথে প্রহসন, সময় নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা, ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রিতা করেই যাচ্ছে। শিক্ষকগণ একই টাইমে ৪ সেশনের ক্লাস দিয়ে রাখেন প্রায়শই। পরবর্তীতে দেখা যায় সকাল ১০ টার ক্লাস দুপুর ৩,৪ টায় কোনোরকম দায়সারাভাবে নিচ্ছে। আমরা এক প্রকার তাদের কাছে জিম্মি। এরকম প্রহসনমূলক আচরণ সমূলে নির্মূল প্রয়োজন। 

২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা বলেন, বিভাগের নাম “অ্যানভাইরলমেন্টাল সায়েন্স এন্ড জিওগ্রাফ“ দেখে ভর্তি হই। নৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষকদের মদদে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর  স্বাক্ষর জালিয়াতি এবং স্বার্থান্বেষী মহলদের চক্রান্তে পরবর্তীতে বিভাগের নাম "জিওগ্রাফি এন্ড এনভায়রনমেন্ট" করা হয়। ২০২১-২২ এবং ২২-২৩ সেশনের প্রসপেক্টাসে আগের নাম দেখানো হলেও শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে এসে জানতে পারে বিভাগের নাম পরিবর্তিত। শত শত শিক্ষার্থী এই স্ক্যামের শিকার। আমরা চাই, বিভাগের যে-সব শিক্ষক এই কাজের সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক এবং আমাদের বিভাগের নাম ফিরিয়ে দেওয়া হোক। 

বিভাগের সভাপতি ইনজামুল হক বলেন, বিভাগীয় মিটিং করে তাদের দাবিগুলোর বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের মাঝে উপস্থাপন করা হবে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেশনজট সর্বোচ্চ ২-৩ মাস রয়েছে যা সমাধান করা যাবে। ক্লাস রুটিনের মাধ্যমে যে ফ্রেমওয়ার্ক তারা দিয়েছে তা করার চেষ্টা করব। ১৫ দিন পূর্বে পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ সম্ভব, তবে ১৫ কার্যদিবসে মধ্যে ফলাফল প্রকাশ সম্ভব না। একটা খাতা বাহিরে গিয়ে ফিরে আসতে মাঝেমধ্যে ৩ মাস লেগে যায়। 

তিনি আরও বলেন, বিভাগের নাম পরিবর্তনের প্রসঙ্গে আমাদের হাত ছিল না, শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরিত একটা দরখাস্ত আসছিল অফিসে। আমরা শিক্ষকরা বসে মিটিং করলাম। পরে ডিন স্যারের মাধ্যমে একাডেমিক কাউন্সিলে ফরওয়ার্ড করা হয়। যেটা একাডেমিক কাউন্সিল ও ভিসি স্যারের ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে সমস্ত প্রক্রিয়ায় নাম পরিবর্তন হয়। সব ডকুমেন্টস আমাদের কাছে আছেই। তবে শিক্ষার্থীরা চাইলে ফিল্ডওয়ার্কের হিসাবনিকাশ অডিট করতে পারে। কিন্তু তাদের চাহিদামতো অর্থ বরাদ্দ সম্ভব না।