লুটপাট নিয়ে ১৬ বছরের শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৬ PM , আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৬ PM
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রশাসনিক পদে পরিবর্তনের হাওয়া লাগে। ১১ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। এরপরেই হাসিনা সরকারের সময়ে পার হওয়া ২০০৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ১৬ বছরের নানা অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন সময় কথা বলেন নতুন উপাচার্য।
আজ (০৬ আগস্ট) নিজের ফেসবুক ওয়ালে উপাচার্য আমানুল্লাহ লেখেন, বিগত সময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যে-সকল অন্যায় দুর্নীতি হয়েছে সেগুলো নিয়ে পদক্ষেপ নিবে নতুন প্রশাসন। তিনি লেখেন, ‘আমাকে যারা চিনেন মনে রাখবেন যেকোনো ধরনের চাপ এবং তদবিরের কাছে আমি মাথা নত করবো না। জুলাই অভ্যুত্থানের হাজারো শহীদের রক্তের ঋণ শোধ করতে এবং আমাদের ৩৫ লক্ষ শিক্ষার্থী, লক্ষাধিক শিক্ষক কর্মচারী এবং প্রায় ২৫০০ কলেজের স্বার্থ রক্ষায় আমি অন্তত পিছপা হবো না। অতীত ভুলে যান। দিনরাত এক করে যে-সব পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি তাতে আগামী বছর থেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বছরে অন্তত শতকোটি টাকা সেইভ করার একটা সম্ভবনা তৈরি হয়েছে।’
তিনি আরও লেখেন, প্রফেশনাল বডি দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮ থেকে ২০২৪ এর সমস্ত কর্মকাণ্ডের শ্বেতপত্র প্রকাশ করব আমরা। আমাদের আওতাভুক্ত প্রতিটি কলেজের স্বতন্ত্র অডিট আমরা করাবো। লুটপাট যা হয়েছে সেসব জাতির সামনে আসা উচিত।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের পরিবারকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহায্য করবো। অন্যায়ভাবে যারা চাকুরিচ্যুত হয়েছেন একটি আইনি কাঠামো এবং স্ক্রুটিনির মাধ্যমে তাদের প্রতি আমরা ন্যায় বিচার নিশ্চিত করবো।’
তিনি লেখেন, ‘আমাকে প্লীজ কাজ করতে দেন। এতো অভিনন্দন, এতো ফোন কল, এতো ভিজিট, এতো তদবির আমি আর নিতে পারছি না। প্লিজ এসব বন্ধ করেন নতুবা ফোন বন্ধ করে দিবো। আমার যেহেতু ব্যক্তিগত কোন অ্যাজেন্ডা নাই, চাওয়া পাওয়াও খুবই সীমিত তাই আমাকে বেশী ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না। সবার আমলনামাই আমাদের টেবিলে আসা শুরু হয়েছে। এযাবৎ কী কী করেছেন, শিক্ষা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোথায় নিয়ে গিয়েছেন তা একবার নিজেকেই জিজ্ঞেস করুন।’
ছাত্রজনতার রক্তের সাথে প্রতারণা করবেন না জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘অন্যায়ের প্রতিবাদ, নির্যাতিত এবং বদনাম সহ্য করে আজকের এই অবস্থানে এসেছি। তাই আমাদেরকে বদনামের ভয় বা অন্য কোন ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। ছাত্রজনতার রক্তের সাথে প্রতারণা আমরা করতে পারবো না। সারাজীবনের জন্য উপাচার্য হই নাই। তাই কোন্দল পাকানো বন্ধ করেন, আমাদেরকে কঠিন হতে বাধ্য করবেন না প্লীজ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মানটা কিছুটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি নিতে চাই আমরা। চেষ্টাটা তো অন্তত করতে দিন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুষ দুর্নীতির সংস্কৃতির বিষয়ে ইঙ্গিত করে তিনি লেখেন, ‘বিশৃঙ্খলা, হিংসা বিদ্বেষ, দখলদারিত্ব, আমিত্ব, শিক্ষক- শিক্ষার্থী-কর্মচারিদের অসম্মান, ঘুষ দুর্নীতির জায়গা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে না। ওসব ভুলে যান। আপনাদের দোয়া এবং আশীর্বাদ কামনা করছি।’