ফুল টাইম অফিস করতে কর্মকর্তাদের বাস থেকে নামিয়ে দিলেন ইবি শিক্ষার্থীরা
ফুল টাইম অফিস করতে কর্মকর্তাদের বাস থেকে নামিয়ে দেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। পরে কর্মকর্তারা নিজেদের অফিসে চলে যান। ঘটনাটি শিক্ষক-কর্মকর্তা এবং শিক্ষার্থীরা ইতিবাচকভাবে দেখছেন। রবিবার বেলা ২ টায় বাসায় ফেরার জন্য কর্মকর্তারা বাসে উঠলে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সময় সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত। গতকাল রবিবার বেলা ২ টার দিকে বাসায় ফেরার জন্য অনেক কর্মকর্তা বাসে ওঠেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা কর্মকর্তাদের পুরো সময় অফিস করতে বাস থেকে তাদের নেমে যেতে বলেন। পরে কর্মকর্তারা নিজ অফিসে ফিরে যান এবং পুরো সময় অফিস করে বেলা ৪ টায় বাসায় ফেরেন।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ কর্মকর্তারা অফিসে এসে আম বাগানে চায়ের দোকানে সময় কাটান। সেখানে দাবা খেলা এবং খোশ গল্পে মেতে থাকেন। ফলে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য কাজে গেলে সেবা পান না। শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রচলিত আছে ‘অনার্স-মাস্টার্স করার থেকেও সার্টিফিকেট উত্তোলন বেশি কষ্ট’। শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হন। এটি সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং কর্মকর্তা সমিতির নেতৃবৃন্দ চেষ্টা করেও বারবার ব্যর্থ হন।
হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইনরান হাসিব বলেন, আমরা ক্যাম্পাস জীবনের শুরু থেকেই দেখে আসছি দুপুর ২ টার ট্রিপে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটা ভিড় লেগে থাকে। অথচ তাদের অফিস ছুটি হয় বেলা ৪ টায়। তারা অফিস ফাঁকি দেয়, উপরন্তু তারা ছাত্রদের বাসে উঠে ভিড় করে এবং সামনের সিটগুলো অন্যায়ভাবে দখল করে নেয়। দীর্ঘদিন এই অন্যায় সহ্য করার পর গত বুধবার তাদেরকে অনুরোধ করা হয়, অফিস ফাঁকি দিয়ে ছাত্রদের বাসে উঠে চলে না যেতে। কিন্তু তারা ছাত্রদেরকে তোয়াক্কা না করে রবিবারে ২ টার সময় সবগুলো বাসে উঠে শহরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। তখন শিক্ষার্থীরা সবগুলো বাস থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে নামিয়ে দেয় এবং ৪ টায় অফিস ট্রিপে শহরে ফেরার অনুরোধ করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুন বলেন, কর্মকর্তারা ঠিকমত অফিস করেন না, আমবাগানে বসে থাকেন। আবার ২ টার বাসে তারা চলে যায়। তাদেরকে এভাবেই গত ছয় বছর দেখে আসছি। এদিকে প্রশাসনিক ভবনে গেলে খারাপ ব্যবহার করে। এদেরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। শিক্ষকদেরও ফুল টাইম অফিস নিশ্চিত করা জরুরি।
কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি দেওয়ান টিপু সুলতান বলেন, কর্মকর্তাদের অবশ্যই ফুল টাইম অফিস করতে হবে। তবে ক্যাম্পাসের শুধু কন্ট্রোলার শাখার কাজ চলছে। দূর দূরান্তের শিক্ষার্থীরা এসে যেন ভালো সেবা পান সেজন্য নির্দেশনা দিয়েছি। এ ছাড়া উপাচার্য নিয়োগ হলে আমাদের সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে মতবিনিময় করে সেগুলো সংশোধন করা হবে।