প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ১৩ দফা দাবি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় সব বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুসহ ১৩ দফা দাবিপূরণের আল্টিমেটাম দিয়েছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রবিবার (১১ আগস্ট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের আলোচনার প্রেক্ষিতে রবি উপাচার্য বরাবর ১৩ দফা দাবি পেশ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো:
১. আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম ও মেয়েদের হল খুলে দিতে হবে।
২. আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হয়রানি ও ছাত্রলীগকে পক্ষপাতিত্ব করায় এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় সকল বিভাগের চেয়ারম্যানদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেসকল শিক্ষকের কাছে নিরাপদ তাদেরকে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে উক্ত দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কারের স্বার্থে সকল সিনেট সদস্যকে পদত্যাগ করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী নতুন সিনেটে দুইজন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৪. শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত কল্পে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় সকল প্রকার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য দলভিত্তিক রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
৫. সাধারণ শিক্ষার্থীদের যাবতীয় অধিকার রক্ষার্থে আগামী ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬. পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে ক্যান্টিন চালু করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে খাবারের মান ও মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।
৭. রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের জন্য সার্বিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন হল ৩০ কর্ম দিবসের মধ্যে ব্যবস্থা করতে হবে। মেয়েদের বিদ্যমান হলে সার্বিক অব্যবস্থাপনা যেমন: মাসিক ভাড়া সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে এবং অবিলম্বে স্বল্পমূল্যে ও মানসম্মত ডাইনিং ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. বর্তমান সেশনজট নিরসনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং সকল সেমিস্টার ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে এবং পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।
৯. শিক্ষার্থীদের উপর বৈষম্যমূলক আচরণ এবং মার্ক টেম্পারিং প্রতিরোধকল্পে সেশনাল ৪০ মার্ক ফাইনাল পরীক্ষা শুরুর ৩০ দিন আগে প্রকাশ করে শিক্ষকদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
১০. শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল অ্যাড্রেস প্রদান করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে বাসের শিডিউল তৈরি করতে হবে।
১১. একাডেমিক-৩ এ একটি রিডিং রুম প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং বিদ্যমান লাইব্রেরীতে স্বল্পমূল্যে নাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
১২. বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্তৃক শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন, নিপীড়ন এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অভিযুক্তদের আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান তুহিন এবং আব্দুর রহমান ফাহিম এর নিঃশর্তে বহিষ্কার করতে হবে। সারা দেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ্যে সমর্থন করায় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জনাব আরমিনা আখতার কে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে।
১৩. বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা শীলা এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাধবকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে পুনরায় তাদের একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনতে হবে।