শনিবারের মধ্যে আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের এফআইআর সংশোধনে আলটিমেটাম
- বেরোবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৪, ১১:২০ PM , আপডেট: ০১ আগস্ট ২০২৪, ১১:২৭ PM
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের এফআইআর সংশোধনে সময় বেঁধে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আগামী শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার মধ্যে এফআইআর সংশোধন না হলে বিকেল ৩টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় এ আলটিমেটাম দেওয়া হয় । এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বেরোবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘ভিডিও কখনো মিথ্যা বলে না। কেননা সেগুলো সরাসরি প্রচারিত হয়েছে। আমরা এফআইআর দেখেছি। সেখানে দোষী করা হয়েছে ১৬ বছরের এক শিক্ষার্থীকে। যেখানে ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে গুলি পুলিশ করেছে।’
ফারজানা জান্নাত তসী নামে আরেক শিক্ষক বলেন, ‘সাঈদ হত্যায় জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং একটি মিথ্যা মামলায় ১৬ বছরের এক শিক্ষার্থীকে জড়ানো হয়েছে। আর কত দিন মিথ্যা দিয়ে সত্যকে ঢাকার চেষ্টা করা হবে? সাঈদ হত্যার সঠিক বিচার না হলে, আমাদের মনে হয় না কোটা আন্দোলনে মৃত কোনো নিহতের সঠিক বিচার হবে।আমরা চাই, সাঈদ হত্যার বিচার দ্রুত করা হোক।’
অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উমর ফারুক বলেন, ‘সাঈদ হত্যার নিরপেক্ষ ও সঠিক বিচার যেন হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কেউ যদি জড়িত থাকে বা প্ররোচিত করে তাহলে তাদেরও যেন বিচারের আওতায় আনা হয়। সাঈদসহ এই আন্দোলনে নিহত সবার বিচারের দাবিতে আজ আমরা দাঁড়িয়েছি। আমরা এই বিচারব্যবস্থার ওপরে আস্থা হারিয়ে ফেলেছি। তাই জাতিসংঘের সহায়তায় যদি এই বিচারকার্য হয়, তাহলে আমরা সুষ্ঠু বিচার পাব।’
প্রসঙ্গত, রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিন পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ১৭ জুলাই তাজহাট থানায় মামলা করা হয়। মামলার বাদী ওই থানার উপপরিদর্শক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ‘বেলা ২টা ১৫ মিনিটের দিকে ছাত্র নামধারী সুবিধাভোগী রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনরত দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন দিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ও তাদের নিকটে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র হতে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও এপিসি গাড়ির মধ্য হতে কং/ ১১৮৬ সোহেল তার নামীয় সরকারি ইস্যুকৃত শটগান হইতে ১৬৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ফায়ার করে। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।’
সাঈদের মৃত্যুর বিষয়ে বলা হয়, ‘বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের একপর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সহপাঠীরা ধরাধরি করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিন হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।’