কোটা সংস্কারের দাবিতে বরিশালে ৫ কলেজ শিক্ষার্থীদের যৌথ গণপদযাত্রা

 ৫ কলেজের শিক্ষার্থীদের গণপদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান
৫ কলেজের শিক্ষার্থীদের গণপদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান   © সংগৃহীত

কোটা বৈষম্য নিরসন করে সংসদে আইন পাশের জরুরি অধিবেশন আহ্বান ও ২৪ ঘন্টার মধ্যে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সারা দেশের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে শান্তিপূর্ণভাবে একজোট হয়ে গণপদযাত্রা করছেন বরিশালের ৫ কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১৪ জুলাই) সকাল ১১টায় বিএম কলেজের জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে পদযাত্রা শুরু করে। পদযাত্রাটি কলেজের জিরোপয়েন্ট থেকে বের হয়ে টাউন হলের সামনে দিয়ে নগরীর কাকলির মোর এসে মিলিত হয়।

বিএম কলেজের সাথে সমন্বয় করে সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বরিশাল কলেজ, বরিশাল সরকারি পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউট ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা একসাথে জেলাপ্রশাসকের কার্যলয়ের অভিমুখে রওয়ানা করেন এবং জেলাপ্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা। 

এসময় সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে, কোটা পদ্ধতি সংস্কার করার দাবি জানান এ শিক্ষার্থীরা।

বিএম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন,আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা  নিজেদের ক্লাস এবং একাডেমিক কার্যক্রম বাদ দিয়ে এত কষ্ট করতে চাই না। তবে যদি রাষ্ট্র এবং আদালত আমাদের এক দফা কর্মসূচি মেনে না নেয় তাহলে এই বৈষম্যমূলক কোটা সংস্কার হওয়া পর্যন্ত রাজপথে অবস্থান করবো।সাধারণ শিক্ষার্থীদের জায়গা থেকে কোটা সংস্কারের কার্যক্রম হিসেবে গণপদযাত্রা এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করলাম। আমরা চাই ২ কর্মদিবসের মধ্যে  যৌক্তিক মাত্রার কোঠাকে নিয়ে এসে সংস্কার করা হোক।

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তৌসিফ আহমেদ সাব্বির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের  মূলমন্ত্র নিশ্চিত করতে ও একটি দক্ষ্য জাতি গড়তে মেধাভিত্তিক নিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশনে ডেকে সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করে আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে আজকে আমাদের এই গণপদযাত্রা ও জেলে প্রশাসকের মাধ্যমে  মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা আশাকরি মহামান্য রাষ্ট্রপতি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সকল গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। অন্যথায় ছাত্রসমাজ নিজেদের অধিকার রক্ষায় বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সর্বাত্মক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পরতে বাধ্য হবে।

বিএম কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ শাহাদাত বলেন, আমরা চাই ছাত্রদের এই ন্যায্য অধিকার সরকার অতি দ্রুত বাস্তবায়নের দিকে নিয়ে যাবে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান অবিভাক। আমাদের আশা তিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের দাবি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। আমাদের এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরে যাবো না।

বিএম কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন সোহাগ বলেন, আমরা বিএম কলেজ সহ বরিশালের হাতেম আলী কলেজ এবং বরিশাল পলিটেকনিক এর সাধারণ শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসক এর মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে যৌক্তিকভাবে কোটা সংস্কার করে আইন প্রণয়ন করার দাবিতে  স্মারকলিপি প্রদান করেছি। আমরা বিশ্বাস করি মহামান্য রাষ্ট্রপতি স্মারকলিপিটি সাদরে গ্রহণ করবেন। এবং শিক্ষার্থীদের কে ক্লাসে ফেরার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন।

বিএম কলেজের শিক্ষার্থী হাফেজ মোঃ মাহাজাবিল আল নাঈম খাঁন, বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে  মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট স্মারকলিপি পেশ করার জন্য বরিশাল সরকারি বিএম কলেজ বরিশাল জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট গণপথযাত্রা ও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা দীর্ঘ অনেক দিন যাবত পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে পারছি না এতে আমাদের পড়াশোনার বিঘ্ন ঘটছে। সরকারের উচিত আমাদের এই দাবিগুলো মেনে নেয়া‌। আমাদের দফা এক দাবি এক অনতিবিলম্বে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতির সংস্করণ করা হোক। যদি আমাদের এই দাবিগুলো সংসদে উত্থাপন না করা হয়, আমাদের দাবিগুলো না মেনে নেওয়া হয় তাহলে কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি আমরা দিব ইনশাআল্লাহ।

 

সর্বশেষ সংবাদ