শিক্ষকদের দাবি নিয়ে মাঠে নামতে হবে কেন, প্রশ্ন বাউবি উপাচার্যের

উপাচার্য আন্তর্জাতিক গবেষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার
উপাচার্য আন্তর্জাতিক গবেষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার  © ফাইল ছবি

সমসাময়িক বিষয়ে শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) উপাচার্য আন্তর্জাতিক গবেষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার। তিনি বলেছেন, শিক্ষকদের দাবি নিয়ে মাঠে নামতে হবে কেন? নানা জটিলতার কারণে শিক্ষকদের সম্মান ও মূল্যায়নের মাপকাঠি আজ পাল্টে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে আমাদের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থায়।

গাজীপুর ক্যাম্পাসে সোমবার এপিএ নৈতিকতা কমিটির ১২তম সভায় কমিটির সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাউবির তথ্য ও গণসংযোগ বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. আ.ফ.ম মেজবাহউদ্দিন মঙ্গলবার (১১ জুন) এসব তথ্য জানান।

বাউবি উপাচার্য বলেন, বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা চলতে পারছি না। প্রাতিষ্ঠানিক খ্যাতি, শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত, অনুষদের অনুপাত, দেশি বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ শিক্ষা কার্যক্রম ও গবেষণা প্রযুক্তিগত উন্নয়নসহ আরো অনেক মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং করা হয়ে থাকে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক-ছাত্রের অনুপাত দেখলেই বোঝা যায়, কত পিছিয়ে রয়েছি আমরা।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান বাড়াতে হলে পূর্ণকালীন প্রফেসরশিপ চালু করা জরুরি। বাউবি সম্প্রতি এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এতে করে, নবীন গবেষকদের বেশ সাড়াও মিলছে।  

অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার অংশীদারিত্বের উপর জোড় দিয়ে বলেন, একলা চলা নীতি পরিহার করে পারস্পরিক সমন্বয়, সমঝোতা, অংশীদারিত্বের মধ্য দিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। উভয় প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা ও রিসোর্স শেয়ারিং এবং আইসিটি ইউনিট, ভার্চুয়াল, ফিল্ডল্যাব ও অনলাইন ক্লাসরুম ব্যবহারের মাধ্যমে গবেষক, শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা গবেষণার উপকরণ পেতে পারে। তাই বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও  দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আন্তঃযোগাযোগ বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিগুলো প্রজেক্ট ভিত্তিক কোয়ালিটি মেজারমেন্ট নিয়ে কাজ করতে পারে। এক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। এছাড়াও সেন্ট্রাল ডাটা রিপোজিটরিসহ গবেষকদের জন্য ডাটা উন্মুক্ত রাখতে হবে, তবেই র‌্যাংকিং এ আসতে পারবে এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

বিশ্ববিদ্যালয়েল র‌্যাংকিং নিয়ে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিংয়ের জন্য গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টি করা জরুরি। গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধাদি নিশ্চিত করা দরকার। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়াস হচ্ছে গবেষণা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাজের সংস্কৃতি একদম ভিন্ন। শিক্ষকদের প্রমোশনের জন্য কোয়ালিটি রিসার্চ পেপার তৈরি ও তা প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত সময় ও অর্থ  দেয়া হয় না, এমনকি প্রবন্ধ প্রকাশের জন্য অর্থ নিজের পকেট থেকে দিতে হয়। একজন শিক্ষককে বছরব্যাপী শ্রেণিকক্ষে পাঠদান, প্রশ্নপত্র, খাতা মূল্যায়ন, পরীক্ষার দায়িত্বসহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। যার কারণে অনেক সময় তিনি গুণগত গবেষণা থেকে পিছিয়ে পড়েন। 

নৈতিকতা কমিটির আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাউবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. নাসিম বানু, উপ-উপাচার্য  (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন,  ট্রেজারার মোস্তফা আজাদ কামাল, রেজিস্ট্রার ও নৈতিকতা কমিটির সদস্য সচিব ড. মহা. শফিকুল আলমসহ অন্যান্য কমিটির সভাপতি-সদস্য সচিববৃন্দ, ডিন এবং পরিচালকবৃন্দ।

 

সর্বশেষ সংবাদ