২৫ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণ যৌতুক নিয়েও স্ত্রীকে নির্যাতন ইবি শিক্ষকের
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। মারধর, শ্বশুরের টাকায় চাকরির দেনা পরিশোধ, স্ত্রীকে অমানবিক নির্যাতনসহ সংসার না করার অভিযোগে তার শাস্তির দাবি জানিয়েছে স্ত্রী জয়া সাহা এবং তার পরিবার। মঙ্গলবার (৪ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারে সংবাদ সম্মেলন করে এ শাস্তির দাবি জানায় তারা।
জানা যায়, নির্যাতনের শিকার অধ্যাপকের স্ত্রী জয়া সাহা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাশ করেছেন এবং নাটোর জেলার উপরবাজার উপজেলার রতন কুমার সাহার বড় কন্যা। এদিকে সঞ্জয় কুমার পাবনা জেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামের সুশান্ত কুমার সাহার পুত্র। ২০১৫ সালে সঞ্জয় এবং জয়া সাহার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। উপহার হিসেবে ২৫ লক্ষ টাকা, ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজ সহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় ফার্নিচার প্রদান করেন। তাদের একটি চার বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে সংসারে চলে নানা টানাপোড়ন। গত বছরের জুন মাসে স্ত্রীকে জোরপূর্বক শ্বশুর বাড়ি রেখে আসে। এরপর থেকে তাদের মধ্যে যোগাযোগ হয়নি। তারা দুইজন মামলা-মোকদ্দমা লড়ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জয়া সাহা ও তার পরিবার
লিখিত বক্তব্যে জয়া সাহা বলেন, সঞ্জয়ের সঙ্গে বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই ধীরে ধীরে আমার স্বপ্ন ভঙ্গ হতে শুরু করে। সে কথায়, কাজে, আচরণে সব সময় আমাকে কষ্ট দিতে থাকে। সে আমাকে নানা জঘন্য ভাষায় গালি দিত। সঞ্জয় আমার উপর পাশবিক নির্যাতন নিপীড়নকারী, যার জন্য আজ আমার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে সেই লোভী, নৃশংস, নীতিহীন, হোয়াইট কলার ক্রিমিনাল, দুশ্চরিত্র এবং অমানুষ জ্ঞানপাপী। স্বামীর ভালবাসা তো দূরের কথা, বিনিময়ে আমার ভাগ্যে প্রতিনিয়ত জুটতে থাকে গালমন্দ, অবজ্ঞা, অবহেলা, অপমান, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা।
জয়া সাহা বলেন, অন্যায়, অত্যাচার ও অমানুষিক নির্যাতনের মাধ্যমে জীবন দুর্বিষহ করে তোলা ঘৃণ্য, জঘন্য, চরিত্রহীন, লম্পট অমানুষের শাস্তি বিধান ও অন্যায়ের প্রতিবিধান এবং সুষ্ঠু ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সুশীল সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, দপ্তর, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এবং আপনারা সহ সকল স্তরের মানুষের সার্বিক সহযোগিতা প্রার্থনা করছি।
জয়া সাহার পিতা রতন কুমার সাহা বলেন, আমার মেয়ে বিয়ের পর থেকে অমানবিক নির্যাতন করেছে সে। এক বছর আগে মেয়েকে আমার বাড়ি রেখে যায়। এরপর আর যোগাযোগ করেনি। আমি তার শাস্তি দাবি করছি।
সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, আমি স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে মোকদ্দমা করেছি। আমি তার সঙ্গে সংসার করতে চাই। এর বেশি কিছু মন্তব্য করতে চাই না।