০৩ জুন ২০২৪, ১৫:৩১

৩ মাস ধরে সনদ উত্তোলন জটিলতায় এক শিক্ষার্থী, ভিসির হস্তক্ষেপে সমাধান

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেশের সব কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীদের মূল সনদ উত্তোলনের আবেদন করতে হয় অনলাইনে। এতে আবেদন করার ১৫ দিনের মধ্যে ফি জমা দেয়ার প্রেক্ষিতে পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ২০২৩ সালের শুরু থেকে এটি চালু করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়টির এই সেবা নিয়ে গিয়ে ভোগান্তির মুখোমুখি হয়েছেন রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজ থেকে ২০১৩-১৪ সেশনে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিষয়ে প্রফেশনাল বিবিএ সম্পন্ন করা এক শিক্ষার্থী। নিয়ম অনুযায়ী, মূল সনদ উত্তোলনের আবেদন করার ১৫ দিনের মধ্যে ফি জমা দিলেও প্রায় ৩ মাস পার হলেও সনদ স্বাক্ষরের আপডেট অনলাইনে (সার্ভার) দেখতে পাননি তিনি। ফলে সনদ প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েন এই শিক্ষার্থী।

জানা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী মূল সনদ প্রাপ্তির জন্য অনলাইনে যথাযথভাবে আবেদন ফরমটি পূরণ করতে হয়। এরপর নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হয়। আবেদন করার ১৫ দিনের মধ্যে ফি জমা দিতে হবে, না হলে আবেদনটি বাতিল হয়ে যাবে।

এদিকে, ফি জমা দেয়ার পর সার্ভারে ৯টি ধাপ শেষ হওয়ার পর একজন শিক্ষার্থী মূল সনদ হাতে পেয়ে থাকেন। তবে ভোগান্তির শিকার ওই শিক্ষার্থী ৭ম ধাপে (প্রিন্টেড) গিয়ে আটকে যান। গত ২৯ ফেব্রুয়ারির পর সার্ভারে ওই ধাপ থেকে তার পরের ধাপে (স্বাক্ষর) আপডেট হয়নি।

জানা যায়, ৭ম ধাপে সনদটি প্রিন্ট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের স্বাক্ষর হয়ে থাকে। এরপর সনদটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট কলেজে পাঠানো হয়।

ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ নিয়ে আজ সোমবার (৩ জুন) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো মশিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, এ ধরনের ঘটনা বিরল। তবে বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করবো। সার্ভারে কোথাও ত্রুটি থাকতে পারে বলে তিনি দাবি করেন।

এর পরপরই আবেদন ৭ম ধাপ থেকে পরের ধাপে (স্বাক্ষর) আপডেট হয়েছে বলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। 

এর আগে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী জানান, সনদ প্রাপ্তির জন্য আবেদনের পরে প্রায় ৩ মাস পার হলেও সনদ স্বাক্ষরের আপডেট জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইটে দেখতে পাননি।

এর আগে ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি মূল সনদের জন্য প্রাথমিক আবেদন করেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি তার আবেদনে ভেরিফাইড স্ট্যাটাস আসে। একই তারিখে আবেদন অনুমোদন হয়ে ২৯ ফেব্রুয়ারি সার্ভার থেকে সনদ প্রিন্ট হয়েছে বলে নোটিফিকেশন দেখানো হয়। কিন্তু এরপরে দীর্ঘ তিন মাস পার হলেও তার সনদ প্রাপ্তির বিষয়ে কোনো স্ট্যাটাস দেখানো হয়নি। 

ওই শিক্ষার্থী জানান, আগে সশরীরে সনদ তুলতে হত। কিন্তু এখন অফলাইনে কোনো কার্যক্রম নেই। সকল প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করতে হয়। বিষয়টি ইতিবাচক। কিন্তু আমার প্রশ্ন হল একটা সনদ স্বাক্ষর করতে কত সময় প্রয়োজন হয়? ৩ মাসের বেশি সময় সনদের আশায় বসে আছি। আমি যে জরুরি প্রয়োজনে সনদ তুলতে চেয়েছি এখন সেটাও অগুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সোমবার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো মশিউর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি প্রথমে সমস্যার বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভারে খোঁজ নেয়ার জন্য সময় নেন। পরে তিনি জানান, এ ঘটনা বিরল। রেকর্ড অনুযায়ী, আমি গত ২৯ ফেব্রুয়ারি উল্লিখিত ট্র্যাক নম্বরের সনদ স্বাক্ষর করেছিলাম। এছাড়া গতকালও প্রায় ৩০০টি সনদ স্বাক্ষর করেছি। 

তবে সনদ স্বাক্ষরের পরও সার্ভারে স্ট্যাটাস দেখতে না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, সনদ স্বাক্ষরের পুরো প্রক্রিয়ায় অনেক লোক জড়িত। কোথাও কোনো মিসটেক হতে পারে কিংবা সাইটে কোথাও ত্রুটি থাকতে পারে। ভুক্তভোগী যিনি, তার সমস্যা সমাধান হওয়া জরুরি। এ সমস্যা যেন পুনরায় তৈরি না হয়, সে বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করবো।