জবির নতুন ক্যাম্পাসের অগ্রগতি নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন নতুন ক্যাম্পাসের কাজ তাড়াতাড়ি শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ মে) সকালে বঙ্গবাজারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জগন্নাথ একটা স্কুল ছিল। প্রাইমারি স্কুল, প্রাইমারি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক হয়, তারপর কলেজ, এখন বিশ্ববিদ্যালয়। এতটুকু জায়গা, বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো-ছিটানো হোস্টেল। সে জন্য সব কিছু এক জায়গায় করে, একটা ভালো ক্যাম্পাস এবং আধুনিক সব সুবিধা সম্পন্ন, সেখানে ছাত্রদের আবাসস্থল, ছাত্রীদের আবাসস্থল, শিক্ষকদের আবাসস্থল, শিক্ষার জন্য আধুনিক, সুন্দর, প্রযুক্তি দিয়ে একটা ক্যাম্পাস তৈরির উদ্যোগ আমরা নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে জায়গা দেওয়া হয়েছে, ডিজাইনও করা হয়েছে। সেই কাজও আমরা খুব তাড়াতাড়ি শুরু করবো। সেভাবে নতুন ক্যাম্পাস আমরা করে দেবো যাতে করে ছেলেমেয়েরা একটা সুস্থ পরিবেশে লেখাপড়া করতে পারে। সেদিকে নজর রেখে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ভিডিওটি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সাড়া পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা ভিডিওটি শেয়ার করে কেউ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন, আবার কেউ কেউ দীর্ঘদিনেও কাজ আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়া হতাশা প্রকাশ করেছেন।
প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম জানান, ‘আমরা খুবই আশান্বিত হয়েছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের প্রকল্পের সম্পর্কে খুবই ভালোভাবে অবগত। তার স্বদিচ্ছার জন্য ২০১৮ সালে কেরানিগঞ্জে জমিটি বরাদ্দ করা হয়। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক যে টেন্ডারগুলো সব প্রক্রিয়া শেষ করে পাস করে গেছেন, আমি শুধু সেগুলোর ওয়ার্ক অর্ডার করেছি। আমি দায়িত্বে আসার পর তদারকি কমিটি এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, এখানে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। আমি প্রকৌশলীদের সঙ্গে মিটিং করেছি। তারাও বিষয়টি স্বীকার করেছে যে, তাদের কাজে গাফিলতি আছে। আমাদের অভ্যন্তরে যারা কাজ করছে, তারা নতুন ক্যাম্পাস বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছার প্রতি সম্মান দেখাতে পারেনি। তাদের সক্ষমতারও ঘাটতি আছে বলে মনে হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়াও আমাদের যে পরিমাণ জনবল দরকার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান যে কাঠামো তাতে এত বড় প্রকল্প চালানো অসম্ভব। কারণ আমাদের সে ধরনের দক্ষ বা বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার নেই। ডিপিপিতে উল্লেখ করা ছিল জনবল দেওয়া হবে, ইঞ্জিনিয়ার দেওয়া হবে, মনিটরিং টিম দেওয়া হবে। কিন্তু কোনও কারণবশত ডিপিপি থেকে সেগুলো বাদ দেওয়া হয়। ফলে আমাদের নিজস্ব শক্তিতে এত বড় প্রকল্পের কাজ কুলিয়ে উঠতে পারছি না। ক্ষুদ্র সামর্থ্য দিয়ে এত বড় একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। সে কারণে আমি সরকারের প্রতি, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিরি প্রতি আপিল করছি। তারা ডিপিপি আবার রিভাইজ করে দক্ষ জনবল, মনিটরিং টিম, অন্যান্য উপাদান দরকার সেগুলো অতিসত্বর দিলে কাজটি আমরা দ্রুত সমাপ্ত করতে পারি।’