১৭ মে ২০২৪, ১৮:৪৭

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়: মূল ক্যাম্পাসে অনার্স চালু থাকার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি

ছবি: ইউজিসি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো।  © ফাইল ফটো

গাজীপুরে অবস্থিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে (অন ক্যাম্পাসে) স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম চালুর দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে শিক্ষকরা। শুক্রবার (১৭ মে) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষে, অধ্যাপক ড. আবু মোঃ ইকবাল রুমী শাহ এবং ড. মোঃ আবুদ্দারদা, সহকারী অধ্যাপক নিপা জাহান, মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোঃ আমিন মিয়া, মোঃ ইব্রাহিম খলিল, মোঃ খায়রুল আলম রাছেল এবং মো. আবু তোহা, প্রভাষক মো. খালিদ হাসান এবং রবিউল হক এ চিঠি দেন।

চিঠিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অনার্স প্রোগ্রাম পরিচালনার আবশ্যকতা ও আইনগত ভিত্তি তুলে ধরে বলা হয়, একাডেমিক মনিটরিং ও উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে যদি সরকারি কলেজগুলোর একাংশ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়, তারপরেও সরকারি ও বেসরকারি কলেজগুলোর একটি নির্দিষ্ট অংশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই থাকছে। এসব অধিভুক্ত কলেজগুলোর একাডেমিক মনিটরিং-এর জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি একাডেমিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া জরুরি। 

আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে যুগোপযোগী সিলেবাস ও কারিকুলাম প্রণয়ণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজসমূহের মধ্যে সহযোগিতামূলক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে ‘কলেজসমূহে’ পঠিত সকল বিষয় স্বল্প পরিসরে হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে মডেল হিসেবে পাঠদান করা আবশ্যক। মূল ক্যাম্পাসে অনার্স ও মাস্টার্স প্রোগ্রাম পরিচালনার জন্য একাডেমিক ভবন, ল্যাব, স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ ও দেশী-বিদেশী উচ্চতর ডিগ্রীধারী ৮০ জন শিক্ষক রয়েছে। ২০২২-২৩ সেশনে ১ম ব্যাচের অন-ক্যাম্পাস অনার্স প্রোগ্রাম চালু করা হয় এবং ২০২৩-২৪ সেশনের ২য় ব্যাচের ভর্তি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অনার্স ও মাস্টার্স প্রোগ্রামে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী ও গবেষক অধ্যয়নরত। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অনার্স প্রোগ্রাম চালুর আইনগত ভিত্তি হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৯২ এর বিভিন্ন ধারা উল্লেখ করে বলা হয়, এটা সুস্পষ্ট হয় যে, একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে অধিভুক্ত কলেজ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্কুল ও কেন্দ্রের জন্য যেকোনো পাঠ্যক্রম নির্ধারণ, বিদ্যমান স্কুল ও কেন্দ্রের পাশাপাশি নতুন স্কুল ও কেন্দ্র স্থাপন এবং সম্প্রসারণ করার ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে। অতএব, জাতীয় শিক্ষা নীতির আলোকে এসব স্কুল ও কেন্দ্রের জন্য স্নাতক ও স্নাতকোত্তরসহ যেকোনো পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচি নির্ধারণ ও শিক্ষার্থী ভর্তি করার ক্ষমতাও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংরক্ষণ করে। এমতাবস্থায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অনার্স প্রোগ্রাম চালু করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২ অনুসরণ করেছে মাত্র।

চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে তার অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানের যথাযথ একাডেমিক মনিটরিং এবং উচ্চ শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান মহোদয়ের নেতৃত্বে গৃহীত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অনার্স প্রোগ্রামসহ নানাবিধ একাডেমিক ও প্রশাসনিক সংস্কার কার্যক্রমকে সফলভাবে বাস্তবায়নে সদয় অনুমতি, সর্বাত্মক সহযোগিতা এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আপনার নিকট সবিনয় অনুরোধ জানাই।

জানা যায়, সর্বশেষ গত ১১ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরে অবস্থিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে (অন ক্যাম্পাসে) স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তখন ইউজিসি এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির নির্দেশনার আগপর্যন্ত ভর্তিসহ এ–সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। এর আগেও ২০২৩ সালে  বিষয়টি নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছিল ইউজিসি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারপর এ বিষয়ে ইউজিসি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আচার্য ও রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়েছিল।