০৪ মে ২০২৪, ২০:২৫

সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে: কুবি শিক্ষক সমিতি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

জরুরি সিন্ডিকেটে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হল বন্ধের ঘোষণা ও মিথ্যা তথ্য প্রদান করায় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে দাবি করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এছাড়াও শিক্ষকদের মারধরের পর উপাচার্যের সাথে শিক্ষকদের আলোচনার সব ধরনের পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে দাবি করে অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক স্থবিরতা নিরসন করে বিশ্ববিদ্যালয়কে গতিশীল করার স্বার্থে উপাচার্য এবং ট্রেজারারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানান তারা।

শনিবার (৪ মে) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করেন তারা। 

গত ৩০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৩তম (জরুরি) সভায় উদ্ভূত সার্বিক পরিস্থিতির অজুহাত দিয়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এসব সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য দাবি করে শিক্ষক নেতারা বলেন, গত ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে ন্যক্কারজনকভাবে উপাচার্য প্রফেসর ড. এএফএম. আবদুল মঈন ও কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ও প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর বহিরাগত সন্ত্রাসী ও অপেশাদার মানসিকতার কতিপয় শিক্ষক দিয়ে প্রাণঘাতি হামলা করা হয়। যা ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের গণহত্যা এবং ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সংঘবদ্ধ পরিকল্পনার স্বরূপ। এছাড়াও শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি ও ভীতির সংস্কৃতি চালু করে সার্বিক অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার সূচনা করেন মাননীয় উপাচার্য।

তারা আরও বলেন, গত ২৮ এপ্রিল উপাচার্য নিজে শিক্ষকদের শারীরিক আঘাত করেন এবং পরবর্তী সময়ে উপাচার্য তাঁর দপ্তর থেকে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে শিক্ষকদের উপর হামলা করান। এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলায় অংশগ্রহণ করার পর একজন উপাচার্য বা ট্রেজারার নৈতিকভাবে তাঁদের প্রশাসনিক পদে বহাল থাকার যোগ্যতা হারান। এমন কি, শিক্ষকদের উপর সরাসরি হামলার মাধ্যমে উপাচার্যের সাথে শিক্ষকদের আলোচনার সব ধরনের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। 

এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের অপসারণের পাশাপাশি হামলায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানায় শিক্ষক সমিতি। তারা বলেন, সিন্ডিকেট সভায় হলসমূহে অস্ত্র এবং অর্থের চালান হচ্ছে এমন অভিযোগে হল বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কোনো ধরনের গোয়েন্দা রিপোর্ট ছাড়া এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে হামলাকারী, হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার জেলখাটা দাগি আসামি ও সন্ত্রাসীদের হল এবং ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ করে দেওয়া হবে বলে শিক্ষক সমিতি আশঙ্কা প্রকাশ করছে। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে এবং শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য উপাচার্য ও ট্রেজারারকে প্রত্যাহার করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত, হামলায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত, সন্ত্রাসী হামলায় অংশগ্রহণকারী সাবেক শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট বাতিল ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রদান এবং আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহ খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে শিক্ষক সমিতি।