অনার্স-মাস্টার্সে ‘ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট’, শিক্ষক নিয়োগে ডাক পাননি স্বল্পনা রানী
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক পদে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করলেও ডাক পাননি প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত ছাত্রী স্বল্পনা রানী। তিনি স্নাতক-স্নাতকোত্তরের পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এ ঘটনায় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের কাছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ওই ছাত্রী। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, যোগ্যতা থাকলে তার চিঠি না পাওয়ার কথা না।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে দশটা থাকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক পদে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় প্রভাষক পদে কল্পনা রানী আবেদন করলেও তাকে পরীক্ষার জন্য চিঠি দেওয়া হয়নি।
স্বল্পনা রানী বিশ্ববিদ্যালয়টির অর্থনীতি বিভাগের ২০০৮-০৯ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি তার ফলাফলের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। স্বল্পনার ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকে ৩.৭৫ ও স্নাতকোত্তরে ৩.৭৮ সিজিপিএ অর্জন করেছিলেন। এছাড়াও তিনি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়টির অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক পদের এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এ নিয়োগে সর্বমোট ২৭ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন। এদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ২৪ জনকে চিঠি দিয়েছে প্রশাসন। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ২০ জন প্রার্থী। এ নিয়োগে সবার সঙ্গে আবেদন করলেও অনার্স-মাস্টার্সে ‘ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট’ স্বল্পনা রানী কোনো চিঠিই পাননি।
অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে তাকে পরীক্ষার সুযোগ না দিয়ে ঈদের ছুটিতে তড়িঘড়ি করে এ পরীক্ষা নিয়েছেন।
জানতে চাইলে স্বল্পনা রাণী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পকে বলেন, আমি সব প্রক্রিয়া মেনে আবেদন করলেও বুধবার পর্যন্ত কোনো চিঠি বা মেসেজ পাইনি। শুনেছি আমার আবেদন বিভাগ থেকে প্রশাসনের কাছে পৌঁছানো হয়নি। তবে আবেদন কেনো বা কী কারণে পেছানো হয়নি তা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোরশেদ হোসেনের সঙ্গে একাধিক মাধ্যমে যোগাযোগ করেও তার থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরী বলেন, কোনো সঙ্গত কারণেই হয়তো তিনি চিঠি পাননি। যোগ্যতা থাকলে তো চিঠি না পাওয়ার কথা না। আর আমি এখন ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছি। গতকাল ক্যাম্পাসে থাকতেও অনেকে আমার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেছেন। এখন আসলে এটা ভ্যারিফাই করতে আমাকে ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখতে হবে। অন্যদিকে ক্যাম্পাসও এখন বন্ধ হয়ে গেছে।
অবশ্য বেরোবির এমন ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত আরেক প্রার্থী জোবেদা আক্তারকেও একই প্রক্রিয়ায় পরীক্ষায় ডাকা হয়নি। তার ওই একটি পদের নিয়োগে পরবর্তীতে চাকরি পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম। এ ঘটনায় জোবেদা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।