গুচ্ছ যাওয়া নিয়ে ইবি শিক্ষকদের বিভক্তি, বিপাকে ভর্তিচ্ছু-অভিভাবকরা
আগামী ১১ মে থেকে শুরু হবে ২০২৩-২৪ সেশনে গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা। ইতোমধ্যে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাচ্ছে। তবে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়া নিয়ে এক্যমতে আসতে পারেনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষকরা। দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। ফলে প্রশাসনও স্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানাতে পারছেন না। সিদ্ধান্তহীনতায় ভর্তিচ্ছু এবং অভিভাবকরা বিপাকে পড়েছেন।
গতকাল শনিবার (২৩ মার্চ) শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ মতের পার্থক্য দেখা দেয়। ১৫ সদস্যের কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক ছাড়া অন্যদের সাতজন গুচ্ছে না যাওয়ার পক্ষে এবং ছয়জন গুচ্ছের পক্ষে মত দেন। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে গুচ্ছে না যাওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত হলে আগ্রহী পক্ষের ছয়জন ‘নোট অব ডিসেন্ট’ প্রদান করেন।
জানা যায়, সমিতির সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গুচ্ছে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল শিক্ষক সমিতির। তবে ইউজিসি ও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সভায় এজেন্ডা আকারে আলোচনা হয়। এতে আগের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন সহসভাপতিসহ ছয়জন নোট অব ডিসেন্ট প্রদান করেন।
নোট অব ডিসেন্ট দেওয়া শিক্ষকরা জানান, যেহেতু গুচ্ছে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৫ হাজার ইবিকে কেন্দ্র হিসেবে পছন্দ দিয়েছে এবং শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষ থেকে ইবিকে গুচ্ছে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনার বিষয় উল্লেখ করে গুচ্ছের আহ্বায়ক অনুরোধ করেছেন। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে গুচ্ছ থেকে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, দিখণ্ডিত হওয়ার কোনো বিষয় না। নোট অব ডিসেন্ট দেওয়ার অধিকার আছে যে কারো। সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে আগের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত বিভাগগুলোকে চিঠি আকারে পাঠাব।
গুচ্ছের আবেদন প্রক্রিয়ায় ইবির যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনো আমরা শিক্ষক প্রতিনিধিরা সিদ্ধান্ত নিইনি। এর আগেই কিভাবে গুচ্ছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন, এটি আমার বোধগম্য নয়।
এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর অভিভাবক কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক রকিব উদ্দীন বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সিদ্ধান্তহীনতা ভর্তিচ্ছু ও আমাদের উৎকন্ঠা বাড়াচ্ছে। তারা সিদ্ধান্ত নিতে নিতে ত গুচ্ছের পরীক্ষা শুরু হবে। তখন স্বতন্ত্র পরীক্ষা নিয়ে তেমন কোন লাভ হবে। শিক্ষার্থীদের সেশনজটে ফেলা ছাড়া। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুত দিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। সিদ্ধান্ত যেটাই নিক দ্রুত নেওয়া উচিত। তবে আমি চাইছিলাম ইবি স্বতন্ত্রভাবে পরীক্ষার আয়োজন করুক।
আরও পড়ুন: অ্যালার্ম বন্ধ করে ঘুমিয়ে উঠে দেখেন ফোন চুরি হয়ে গেছে ঢাবি ছাত্রের
প্রসঙ্গত, গত ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে নানা ভোগান্তির প্রেক্ষিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহল নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিল। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি প্রথম দিকে গুচ্ছের বিপক্ষে অনড় অবস্থান নিলেও পরবর্তীতে শর্তসাপেক্ষে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। এদিকে ২০২২-২৩ শিক্ষবর্ষে সিন্ডিকেট সভায় একক পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। তবে পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতির আদেশের পর ফের গুচ্ছে অংশ নেয় ইবি।