ইবিতে সম্প্রীতির বন্ধনে ইফতার আমেজ

প্রতিবছর ইফতারকে ঘিরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে উৎসবের সৃষ্টি হয়। পরিবারের সঙ্গে ইফতার না করতে পারার আক্ষেপ ঘোঁচাতে এ মাসে ইফতারকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে ইফতার উৎসবে মাতেন শিক্ষার্থীরা। মাঠ ছাড়াও হলের ছাদ ও ডাইনিংসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বন্ধুবান্ধব এবং সিনিয়র-জুনিয়রদের সঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে ইফতার করতে দেখা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন বিকেল হলেই শিক্ষার্থীদের ছোট ছোট জটলায় পূর্ণ হয়ে ওঠে ক্রিকেট মাঠটি। বিস্তৃত সবুজ মাঠ জুড়ে সবাই প্রস্ততি নিতে থাকে ইফতারির জন্য। দলের মধ্যে কেউ ছোলা মুড়ি মাখাতে ব্যস্ত, কেউ ব্যস্ত শরবত বানাতে। কেউবা আবার গল্প আড্ডায় জমিয়ে রাখছেন আসর। এদিকে রোজা শুধু মুসলমানদের ইবাদত হলেও বন্ধুদের দাওয়াতে এসব আসরে যোগ দেন অন্য ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরাও। এ যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক সুন্দরতম মেলবন্ধন। সকলে মিলে ইফতারি সামনে নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন পশ্চিম দিগন্তে সূর্য ডোবার। এছাড়া ইফতার শেষে মাঠেই জামাতে নামাজ আদায় করেন শিক্ষার্থীরা। যা এক চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি করে।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের নীরব প্রতিবাদস্বরূপ প্রতিদিন গণ ইফতার করেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া পুরো মাঠজুড়ে বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ছাত্রকল্যাণ ও সামাজিক সংগঠনের ইফতারের আয়োজনে ক্যাম্পাস সম্প্রীতির উৎসবে মেতে উঠে।

এদিকে বিকাল থেকে ইফতারি কেনাকাটায় শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়। প্রায় ১৫ থেকে ১৬টি ভ্রাম্যমাণ দোকানে ছোলা-মুড়ি, বিভিন্ন ভাজা, জিলাপি, বাহারি ধরনের শরবত, লাচ্ছি ও ফলের সমাহার নিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও রয়েছেন। বেলা গড়ার সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের আনোগোনায় এসব বিক্রেতারা ব্যস্ত হয়ে পড়েন। জমে ওঠে ক্যাম্পাসের ছোট্ট ইফতারের বাজার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজু মিয়া বলেন, রমজান মাসে প্রতিবছর ইফতারকে কেন্দ্র করে ক্রিকেট মাঠে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শুধু মুসলিমরাই নয় আমাদের সাথে আমাদের অনেক অন্য ধর্মের বন্ধুরাও ইফতারে অংশগ্রহণ করে। এটা দেখে অনেক ভালো লাগে।

এ অনুভূতি ব্যক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, প্রতিবছর রমজান মাসে ইফতার উপলক্ষ্যে এক আমেজের সৃষ্টি হয়। সিনিয়র-জুনিয়র, বন্ধু ও বান্ধবীদের সঙ্গে একসঙ্গে ইফতারি করা এক অন্যরকম ভাল লাগা কাজ করে। তবে যারা আগেই বাড়ি গেছে তারা এ আমেজ থেকে বঞ্চিত হল।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাহমুদুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট মাঠে ইফতারের এমন দৃশ্যখুব ভাল লাগে। এরকম পরিবেশ অব্যাহত থাকুক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সবুজ বলেন, পরিবারকে ছাড়া প্রথম বাইরে ইফতার করছি। প্রথমে খারাপ লাগলেও বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার করা ভালোই লাগছে।


সর্বশেষ সংবাদ