নিয়োগ নিয়ে ইবি উপ-উপাচার্যের কথোপকথন ভাইরাল, থানায় জিডি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মালি নিয়োগ নিয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানের মোবাইল ফোন নম্বর সম্বলিত হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের একাধিক স্ক্রিনশট ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে অর্থ লেনদেন এবং নিয়োগ নিশ্চিতের বিষয়টি উঠে এসেছে। তবে বিষয়টি ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে ইবি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি।
বুধবার (১৩ মার্চ) ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উপ-উপাচার্যের পক্ষে তার একান্ত সচিব সোহেল রানা এ জিডি (নং ৪৪৪) করেন।
জিডিতে বলা হয়েছে, গত ১০ মার্চ রাত ১১টায় ইবি ভাইরাল নিউজ নামক অজ্ঞাতনামা ফেসবুক আইডি থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপ-উপাচার্যকে জড়িয়ে একটি মিথ্যা স্ট্যাটাস দেয়। ‘মালী নিয়োগ নিয়ে প্রো-ভিসি মাহবুবুর রহমানের সাথে তার ঘনিষ্ট চন্দনের কথোপকথন ফাঁস। রশিদের চাকুরি শিওর করেছেন প্রো-ভিসি (...) মাহবুব’ শীর্ষক ভিডিওটি ছাড়া হয়।
বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেখতে পেয়ে অজ্ঞাতনামা ফেসবুক আইডির সম্পর্কে এবং এরূপ মিথ্যা স্ট্যাটাসের বিষয়ে জানার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। এ অবস্থায় উপরোক্ত বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করে রাখা প্রয়োজন বলে এতে উল্লেখ করা হয়।
জানা গেছে, গত রোববার রাতে উপ-উপাচার্যের মোবাইল ফোন নম্বর সম্বলিত হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের তিনটি স্ক্রিনশট সংযুক্ত করে পোস্টটি করা হয়। স্ক্রিনশটগুলো রশিদ নামে এক নিয়োগপ্রার্থীকে মালি পদে নিয়োগ দিতে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে রেজিস্ট্রার অফিসের উপ-রেজিস্ট্রার চন্দন কুমার দাসের সঙ্গে উপ-উপাচার্যের কথোপকথন বলে ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্ক্রিনশটগুলোতে দেখা যায়, নিয়োগের বিষয়ে আপডেট জানতে চেয়ে উপ-উপাচার্যকে মেসেজ দেওয়া হয়েছে। তখন উপ-উপাচার্য তাকে চন্দন বলে সম্বোধন করে এ বিষয়ে পরবর্তীতে জানাবেন বলে জানান। তখন জবাবে চন্দন লেখেন, ‘ওকে স্যার, আই এম ওয়েইটিং ইউর কনফার্মেশন। স্যার রশিদ আমার কাছে ৮ দিয়ে গেছে। প্লিজ একটু দেখেন স্যার।’
জবাবে উপ-উপাচার্য তার সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন বলে মেসেজ দেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর রশিদের চাকরি নিশ্চিতের কথা জানিয়ে পুনরায় চন্দনকে মেসেজে লেখেন ‘রশিদ ডান। ডোন্ট ওরি। ভিসি প্রবলেম করতেছিল। বাট এভরিথিং ওকে নাও।’ এছাড়াও অর্থের পরিমাণ বাড়াতে রশিদকে বলার জন্য চন্দনকে মেসেজ দেন উপ-উপাচার্য।
আরো পড়ুন: নূর উদ্দীনের বহিষ্কারাদেশ তুলে নিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
বাড়ানোর বিষয়টি খেয়াল রাখতে পরবর্তীতে আবারও মেসেজ দেওয়া হয়। জবাবে চন্দন লেখেন, ‘আমি বলেছি স্যার। আফটার জয়েনিং ২ দিতে চেয়েছে।’
এ বিষয়ে চন্দন কুমার দাস বলেন, ‘স্ক্রিনশটগুলো আমি দেখেছি। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক। এ বিষয়ে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আশা করছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভালোভাবে বিষয়টি বিশ্লেষণ করে একটি সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাবে।’
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে থানায় জিডি করা হয়েছে। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক।