হলের কিচেনে সিনিয়রের মারধরে অজ্ঞান জুনিয়র ছাত্রী
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের কিচেনে এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার ছাত্রী হলের হাউস টিউটর ড. নিপা দেবনাথ ও প্রোভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।
মারধরের শিকার ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর নাম ইতি খাতুন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় মারধরে জড়িত ছাত্রীর নাম তাসমিম সানজানা সৃষ্টি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ইতি খাতুন বলেন, সেদিন আমি রান্না ঘরে ছিলাম। এসময় সৃষ্টি আপু ডিম ভাজতে চাইলে ছেড়ে দিই। কিন্তু রান্না শেষ করতে দেরি হওয়ায় এবং আমার ক্লাসের সময় হওয়ায় দ্রুত রান্না শেষ করতে বলি। কিন্তু আমি জুনিয়র বলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন। আমার বাবা-মা তুলে গালি দেন।
তিনি বলেন, আমি গালিগালাজের প্রতিবাদ করায় এক পর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি শুরু করেন তিনি। তার মারধরে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
তবে ইতিকে মারধরের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাসমিম সানজানা সৃষ্টি। তিনি বলেন, ‘জুনিয়র হয়ে ইতি বেয়াদবি করেছে। আমার দিকে তেড়ে এসেছে। আমি কি বসে থাকব! আমিও মাইর খাইছি, আমিও লিখিত অভিযোগ দেব।’
আরও পড়ুন: লাইব্রেরিতে পড়তে এসে মারামারিতে জড়ালেন ঢাবির দুই ছাত্রী
এদিকে, মারামারির এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে সৃষ্টির কাছে সাংবাদিক পরিচয়ে ঘটনার বিবরণ জানতে চাইলে সৃষ্টির ছেলে বন্ধু ফাহিম ইশতিয়াক এক সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে নিউজ করলে মারধর ও মামলার হুমকি দেন।
হুমকির ঘটনায় কল রেকর্ডে শোনা যায়, ‘এই নিউজ যদি হয়, আর তুই যদি জড়িত থাকিস তোর খবর আছে। তোর নামে মামলা হবে। তোর লাইফ কীভাবে হেল করতে হয় তা আমি দেখব। তোর সাহস কী! এই চু.. পোলা। তুই আজ দেখা কর। তোর খবর আছে।’
ফাহিম ইশতিয়াক ক্যাম্পাসের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির অনুসারী বলে পরিচিত। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, এই ছেলে ছাত্রলীগের কোনো রাজনীতিই করে না। তাকে আমি চিনিই না।
জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট দীপিকা রানী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। হলের শৃঙ্খলা কমিটিতে এটা তোলা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এটি একটি নিন্দনীয় কাজ। সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত কাজ করবে। এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।