ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ: সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে মারধরের শিকার ২ সাংবাদিক
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা আবু নাঈম আব্দুল্লাহর (যাযাবর নাঈম) অনুসারীদের হামলায় আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সাংবাদিক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হলে সিট বরাদ্দকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ বাঁধলে সংবাদ সংগ্রহের সময় এ হামলা হয় বলে জানা গেছে। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই হলের সামনে এই মারধরের ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, সোমবার বিকালে অগ্নিবীণা হলের ১০৫ নম্বর কক্ষে আসন দখলকে কেন্দ্র করে ফোকলোর বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী যাযাবর নাঈম ও ইংরেজি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লোবনের উপর আঘাত করে ছাত্রলীগের আরেক নেতা মাহফুজুর রাজ্জাক অনিকের অনুসারীরা। এরপর ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হল, চন্দ্রবিন্দু ক্যাফে ও সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের সামনে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রুপের অনুসারীরা। এসময় যাযাবর নাঈম, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ বিল্লাহ এবং ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের রিফাতসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আহত হয়।
এ ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহের সময় দফায় দফায় দুই সাংবাদিককে মেরে আহত করে যাযাবর নাঈমের অনুসারীরা। আহত দুই সাংবাদিক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি ফাহাদ বিন সাঈদ ও যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি আহসান হাবিব রিয়াদ।
আহত সাংবাদিক আহসান হাবিব রিয়াদ জানান, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ বাঁধলে সংবাদ সংগ্রহের জন্য আমি এবং তৈয়ব শাহানুর লাইব্রেরির তিন তলায় যাই। এসময় নিচে থাকা ছাত্রলীগ কর্মীরা ব্যাপারটা লক্ষ্য করে দলবেঁধে লাঠিসোটা, রড নিয়ে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা শুরু করে। পরবর্তীতে ফাহাদ ভাই আমাকে নিয়ে বেরিয়ে আসার সময় আরেকদফা হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এসময় কয়েকজন রড দিয়ে ফাহাদ ভাইয়ের মাথায় ও পিঠে আঘাত করে তারা।
ফাহাদ বিন সাঈদ জানায়, হাবীবের উপর আঘাতের পর জয়ধ্বনি মঞ্চের পিছনে দলবেঁধে আমার উপরও অতর্কিত হামলা চালায় যাযাবর নাঈমের অনুসারীরা।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাথার দান চিকিৎসা কেন্দ্রে আহত সাংবাদিকদের দেখতে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। এসময় তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি যারা নষ্ট করছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দ্রুতই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর আহত দুই সাংবাদিকের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট মাসুম হাওলাদারকে আহ্বায়ক, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহকে সদস্য এবং প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জিকে সদস্য সচিব করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।