দেড় মাস পর নেকাব পরেই ভাইভা দিলেন ইবির সেই ছাত্রী
প্রায় দেড় মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশে নেকাব ইস্যুতে আলোচিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সেই ছাত্রীর ভাইভা নেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ১১ টায় নেকাব পরেই ভাইভাতে অংশ নিয়েছেন ওই ছাত্রী। এর আগে গত বুধবার ভাইভায় অংশ নিতে ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। বিভাগের সভাপতি শিমুল রায় এই তথ্যটি নিশ্চিত করেন।
ভাইভা শেষে ওই শিক্ষার্থী জানান, ‘ভাইভা ঠিকমতো সম্পন্ন হয়েছে। আমরা ওই ছাত্রীর ভাইভা পোস্টপন্ড রেখেছিলাম। আজ ওই শিক্ষার্থীর ভাইভা নিয়েছি। এর আগে উপাচার্য স্যার আমাদের ডেকে ভাইভা নিতে বলেছিলেন।’
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ভাইভা বোর্ডে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শিমুল রায়, সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম ও পরীক্ষা কমিটির সভাপতি উম্মে সালমা লুনা উপস্থিত ছিলেন। এসময় ভাইভার শুরুতে আলাদা কক্ষে নিয়ে উপস্থিত নারী শিক্ষিকার দ্বারা ওই ছাত্রীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
ভাইভার বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘বিভাগের পক্ষ থেকে নেকাব না খোলার আশ্বাস পেয়ে ভাইভাতে অংশ নিয়েছি। ভাইভাতে স্যার ম্যামরা অনেক আন্তরিক ছিলেন। আমি চাই ভবিষ্যতে আর কোনো শিক্ষার্থী যেন এরকম কোনো ঘটনার সম্মুখীন না হয়।’
আরও পড়ুন: নেকাব না খোলায় ছাত্রীর ভাইভা নেননি ইবি শিক্ষকরা
এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ভাইভায় ওই ভুক্তভোগী ছাত্রী নেকাব পরে অংশ নেয়। এসময় ভাইভা বোর্ডের শিক্ষকরা তার পরিচয় নিশ্চিতের জন্য তাকে নেকাব খুলতে বলেন। কিন্তু ওই ছাত্রী নেকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানান এবং প্রয়োজনে নারী শিক্ষকদের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত করতে অনুরোধ করেন।
কিন্তু ভাইভা বোর্ডে একজন নারী শিক্ষিকা উপস্থিত থাকলেও তার মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিতের বিষয়ে উপস্থিত শিক্ষকরা অসম্মতি জানান এবং তাকে ভাইভা বোর্ডের সকল সদস্যদের সামনে নেকাব খুলতে বলেন। পরে নেকাব না খোলায় ওই ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ভাইভা থেকে বের করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: নেকাব পরায় ছাত্রীর ভাইভা না নেওয়ায় প্রতিবাদে ইবিতে ফের মানববন্ধন
পরবর্তীতে মুখ দেখাতে হবে এমন শর্তে বিভাগ থেকে ওই ছাত্রীকে দুইবার ভাইভাবে ডাকা হয়। তখন ওই ছাত্রী এতে অস্বীকৃতি জানান। পরে দীর্ঘ এক মাস পর ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসলে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন মহলে শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা। এ ঘটনার প্রতিবাদে দুই দফায় মানববন্ধন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করেছেন শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে উপাচার্যের নির্দেশে নেকাব পরিহিত অবস্থায়ই আজ ওই ছাত্রীর ভাইভা নেওয়া হয়েছে।