২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৪২

এক বছরে ইবির ৫ জনের ছাত্রত্ব বাতিলসহ ১১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সারাবছরই আলোচিত ছিল র‍্যাগিং, ভাঙচুর এবং মারামারি। এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছেন। এর মধ্যে ৫ জনের আজীবন এবং ৬ জনের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। যা অন্য বছরগুলোর তুলনায় বেশি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে মনে করছেন সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

চলতি বছরের গত ১১ ও ১২ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গণরুমে নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগ নেত্রীসহ পাঁচ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এর দায়ে ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচজনের ছাত্রত্ব বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬০ তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের নির্দেশনা মোতাবেক তাদের আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বহিষ্কৃত অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন—  চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও একই বিভাগের মুয়াবিয়া জাহান।

মেডিকেল ভাঙচুরের ঘটনায় ৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
চলতি বছরের জুলাই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে চিকিৎসা গ্রহণ করতে যান আইন বিভাগের ছাত্র রেজোয়ান সিদ্দিক কাব্য। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদুর রহমান মিল্টন তাকে ইনজেকশন দেন। এর আধঘণ্টা পর কুষ্টিয়া পাঠানোর জন্য ডাক্তারের সাথে বাকবিতণ্ডা শুরু করেন কাব্য। ডাক্তার তাকে অ্যাম্বুলেন্স জরুরি ছাড়া দেওয়া হয় না বলে জানান। এরপর চিকিৎসা কেন্দ্রের অফিসের চেয়ার টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করেন এবং প্রক্টরিয়াল বডি অনুমতি না দেয়ায় আমি গাড়ি দিতে রাজি না হওয়ায় অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার শাহিনুজ্জামানকে মারধর করেন কাব্য ও তার সঙ্গীরা। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।

বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন— আইন বিভাগের ছাত্র রেজোয়ান সিদ্দিক কাব্য, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী হিশাম নাজির শুভ এবং মিজানুর রহমান ইমন।

র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় তিন শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার
চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক নবীন শিক্ষার্থী লিখিতভাবে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ করেন একই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে। তদন্ত করতে গিয়ে উভয় কমিটি ঘটনার সত্যতা পায়। এ ঘটনায় তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃতরা হলেন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার পুলক, শেখ সালাউদ্দীন সাকিব ও সাদমান সাকিব আকিব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল মামুন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কঠোর সিদ্ধান্ত অন্যান্য শিক্ষার্থীকে ঘৃণীত অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখবে। যদিও শাস্তিপ্রাপ্তদের জন্য খারাপ লাগছে। তারা চাইলে এমনটা না করলেও পারতেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, প্রতিটি ঘটনার আলোকে  তদন্ত কমিটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিধি মোতাবেক ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা র‍্যাগিংকে না বলি।