১৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৫

অভিভাবক শূন্য জবি, কে হচ্ছেন পরবর্তী উপাচার্য

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হকের মৃত্যুর পর অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। তিনি অসুস্থ হওয়ার পর থেকে উপাচার্য পদে রুটিন দায়িত্ব পালন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদ। পরে তিনি প্রয়াত হওয়ায় এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনায়, কে হচ্ছেন দেশের অন্যতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নতুন অভিভাবক।

অবশ্য কারা এ পদের জন্য এগিয়ে, সে বিষয়ে কোনও ধারণা নেই কারও। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কাজের অগ্রগতি ঠিক রাখতে তারা শিগগিরই নতুন উপাচার্য চান। পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক শিক্ষকদের চাওয়া, জবি শিক্ষকদের মধ্য থেকেই আসুক পরবর্তী উপাচার্য।

একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যোগ্য একজন অভিভাবক হারিয়েছে। শিক্ষার্থী হিসেবে তার কাছে যেকোনো সময় যেকোনো বিষয়ে গেলে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে শুনতেন। প্রায়ই তিনি শিক্ষার্থীদের নিজের সন্তানের মতো করে জীবন ও ক্যারিয়ার নিয়ে বিভিন্ন আদেশ-উপদেশ দিতেন। পরবর্তী উপাচার্য হিসেবে যিনিই  আসবেন, তার মধ্যে এমন বৈশিষ্ট খুঁজবেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব এডুকেশন এন্ড রিসার্চ’র ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই উপাচার্য পদে দ্রুত যাতে নতুন কেউ নিয়োগ পান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কাজ যেন থেমে না থাকে। আমার দাবি থাকবে, ইমদাদুল হক স্যারের স্মৃতি রক্ষার্থে এবং তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে জবির কোনো একটি ভবন যেন তাঁর নামে নামকরণ করা হয়।’

উপাচার্য অসুস্থ থাকায় কোনো সিন্ডিকেট সভা হয়নি। কিছুদিন আগে অনলাইনে হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। এদিকে প্রতিষ্ঠানটিতে নেই উপ-উপাচার্য পদও। তাই দীর্ঘদিন অভিভাবকহীন হয়ে থাকলে অনেক কাজ স্থবির হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগে উপাচার্য অসুস্থ থাকায় কোনো সিন্ডিকেট সভা হয়নি। কিছুদিন আগে অনলাইনে হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। এদিকে প্রতিষ্ঠানটিতে নেই উপ-উপাচার্য পদও। তাই দীর্ঘদিন অভিভাবকহীন হয়ে থাকলে অনেক কাজ স্থবির হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘উপাচার্য অসুস্থ থাকার সময় থেকেই সিন্ডিকেট সভা হচ্ছে না। তাছাড়া নানা ধরনের প্রশাসনিক কাজও বন্ধ হয়ে আছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় এভাবে চলতে পারে না। আমি ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছে বলেছি উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে যাতে তারা দ্রুত কথা বলে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমিও চাই দ্রুত উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে আটকে থাকা সব কাজ ঠিকভাবে হোক।’ তিনি উপাচার্য ইমদাদুল হকের জন্য দোয়া করার কথাও বলেছেন।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বড় একটি অংশের চাওয়া- জবি থেকেই উপাচার্য কিংবা কোষাধ্যক্ষের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোয় নিয়োগ হোক। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক সমিতিও এ দাবি জানিয়ে আসছে। এখন পদটি শূন্য হওয়ায় তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও শিক্ষককে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হোক।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন শতাধিক অধ্যাপক রয়েছেন। এর মধ্যে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক আছেন ৩০ থেকে ৩৫ জন। আমরা চাই এর মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগ হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সবার একই চাওয়া।

আরো পড়ুন: আটকে আছে মাধ্যমিকের ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির অর্থ

তিনি বলেন, এখনও এ পদের জন্য কোনো নাম আলোচনায় আছেন কিনা, তারা জানেন না। তবে উপাচার্য প্রয়াত হয়েছেন, এটা সরকারের সংশ্লিষ্টরা নিশ্চয়ই জানেন। তাদের বিবেচনায় যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেনি বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে অধ্যাপক ইমদাদুল হকের ক্যান্সার ধরা পড়ে। উন্নত চিকিৎসা নিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে যান তিনি। পরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তিনি ১২ অক্টোবর দেশে ফিরে আসেন। তবে ১১ নভেম্বর (শনিবার) ভোরে রাজধানীর বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।