‘আমরা গাজার প্রতিটি শিশুর অদম্য স্বপ্নের ভিতর বাঁচি’
ফিলিস্তিনের গাজায় ইজরায়েলের চলমান সহিংসতার বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সায়েম মুহাইমিন বলেন, আমরা গাজার প্রতিটি শিশুর অদম্য স্বপ্নের ভিতর বাঁচি। আমরা বলতে চাই আমরা ইব্রাহিমের ঈমান, ইসমাঈলের ইখলাস নিয়ে বাঁচি।
রবিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০ টায় ক্যাম্পাস জুড়ে বিক্ষোভ মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় কুবি শিক্ষার্থী আরও বলেন, সায়েম মুহাইমিন আপনারা জানেন ফিলিস্তিন ও ইজরায়েলের মধ্যকার এই সংঘর্ষ এক পাক্ষিক। আমাদের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই একটি বিশ্ববিদ্যালয় ‘গাজা বিশ্ববিদ্যালয়’ সন্ত্রাসী ইজরায়েল বোমা মেরে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। আমরা শিক্ষার্থী হিসেবে বলতে চাই আমরা গাজার সকল ভাই ও বোনদের পাশে আছি।
ফিলিস্তিনকে সংহতি জানিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে শিক্ষার্থীরা
সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের পতাকা, বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে অবস্থান করেন। ‘সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র ইজরায়েল নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, আল আক্বসা থেকে নামাজের দিক পরিবর্তন করেছি মনের দিক না, যে কাঁদে কাঁদুক তবু লিখি ফুটনোট, ফুল তুই তেলাবিবে বোমা হয়ে ফুট, আল আক্বসায় হামলা কেন জবাব চাই,’ ইত্যাদি স্লোগান ও ব্যানার-পোস্টারে অবস্থান নিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের৷
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে চবিতে সমাবেশ
সংহতি সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ফিলিস্তিন মুসলিমদের ভূমি, কুরআনে বর্ণিত পবিত্র ভূমি, আক্বসা মুসলিমদের কেবলা। ইজরায়েলি সন্ত্রাসবাদ থেকে আমরা এই ভূমির স্বাধীনতা চাই। মুসলিমদের ভূমি মুসলিমদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক। ইজরায়েলের ওপর ফিলিস্তিনিদের এই আঘাত নিজেদের ভূমিকে স্বাধীন করার লড়াই, স্বাধীনতার লড়াই। আজাদী লড়াই। স্বাধীনতার লড়াই কখনো সন্ত্রাসবাদ হতে পারে না।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা দাবি করে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সোহাগ আহমেদ বলেন, ফিলিস্তিনে আমাদের ভাই-বোনদের উপর সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র ইজরায়েল যে বর্বর হামলা চালিয়েছে তাতেও আমরা নিশ্চুপ। ২৩ লক্ষ মানুষকে দীর্ঘ ৭৫ বছর ধরে দখলদার ইজরায়েল নিরীহ ফিলিস্তিনের উপর নির্যাতন করে আসছে। নেতানিয়াহু নিষ্পাপ শিশুদের হত্যা করছে। একজন মুসলিম হিসাবে আপনি, আমি চুপ থাকতে পারি না; কাল হাশরের ময়দানে আপনাকে জবাবদিহি করতে হবে। ইজরায়েলকে উদ্দেশ্য বলতে চাই তোমরা এই পবিত্র ভূমি থেকে চলে যাও, ফিলিস্তিনকে স্বাধীনতা দাও।
বর্তমান পৃথিবীর ইতিহাস মুসলমানদের নির্যাতিত হওয়ার ইতিহাস উল্লেখ করে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইউসুফ ইসলাহী বলেন, আপনারা একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন যুগে যুগে যখনি মুসলমানদের উপর এমন সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে তখন সারা পৃথিবীর সমস্ত অমুসলিম শক্তি একত্রিত হয়ে মুসলমানদের উপর হামলা করেছে।
“সেইসব হামলার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস প্রতিশোধের আগুন নিয়ে জিহাদের ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছে। আমরা সেই নির্যাতিত মুসলমানদের পক্ষে সংহতি প্রকাশ করার জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়েছি। আমরা আজকে আমাদের এই সংহতি সমাবেশ থেকে জানিয়ে দিতে চাই পৃথিবীর যে প্রান্তেই যখন কোন মুসলমান নির্যাতিত হবে আমাদের অবস্থান সব সময়েই সকল নির্যাতিত মানুষের পক্ষেই থাকবে।”