১০ অক্টোবর ২০২৩, ১০:১৯

একসঙ্গে জবি ছাত্রলীগ ও আ.লীগের বড় পদে জিনিয়া আফরিন

জিনিয়া আফরিন  © টিডিসি ফটো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েও তথ্য গোপন করে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য পদ বাগিয়ে নিয়েছেন ছাত্রলীগ নেত্রী জিনিয়া আফরিন। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কিংবা কেন্দ্রীয় কমিটির কাউকে না জানিয়ে এ কাজে তিনি সাবেক ছাত্রনেতা পরিচয় দেন। তার এমন পদক্ষেপে বিরক্ত শাখা ছাত্রলীগ। তারা জানিয়েছেন, নিয়মানুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। 

জানা যায়, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। যার কার্যক্রম এখনও চলমান। সেই কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পেয়েছিলেন জিনিয়া। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পদে থেকেও তথ্য গোপন করে গেল অক্টোবরের ৪ তারিখে ঘোষিত আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য পদে আসেন তিনি।

আমার কাছে শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে জিনিয়ার ইস্তফা নেওয়ার কোনো তথ্য নেই। কেন্দ্রীয় সভাপতি-সেক্রেটারি থেকে ইস্তফা নিয়েছে কিনা সে বিষয়েও জানা নেই। -জবি ছাত্রলীগ

চলতি বছরের ৪ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে ঘোষিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওই কমিটির বিজ্ঞপ্তিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক জিনিয়া আফরিনের পদে থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

শাখা ছাত্রলীগের পদে থাকলেও বিজ্ঞপ্তিতে তার নামের পাশে লেখা রয়েছে ‘সাবেক ছাত্রনেতা’। জানতে চাইলে একইসঙ্গে দুই পদে থাকার কথা অকপটে স্বীকারও করেন জিনিয়া আফরিন। তিনি বলেন, ‘‘আমি জবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে অব্যহতি নেইনি। আমি সাবেক নই।’’

দেখে দেখে তিনি এভাবে পদ ভাগানো শিখেছেন জানিয়ে জিনিয়া বলেন, ‘‘আমি সিনিয়রদের একসঙ্গে দুই কমিটিতে দায়িত্ব পালন করতে দেখেছি। তাই আমিও দুই কমিটিতে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

তাহলে বিজ্ঞপ্তিতে কেন ‘সাবেক ছাত্রনেতা’ লেখা হয়েছে জানতে চাইলে জিনিয়া বলেন, “আওয়ামী লীগের ওই কমিটি পদপ্রাপ্ত হয়েও যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারা সবাই সেখানে ‘সাবেক ছাত্রনেতা’ লিখেছেন। তাই আমিও লিখেছি। এ বিষয়ে এর বাইরে আমি আর কিছুই বলতে চাই না।’

জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, জিনিয়া আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটিতে পদ পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানাই। কিন্তু সে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি নেয়নি। কেন্দ্র থেকে নিয়েছে কিনা সে বিষয়ে জানা নাই। আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারির সাথে আলোচনা করে দেখবো।

আমি সিনিয়রদের একসঙ্গে দুই কমিটিতে দায়িত্ব পালন করতে দেখেছি। তাই আমিও দুই কমিটিতে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। -জিনিয়া আফরিন

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, আমার কাছে শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে তার ইস্তফা নেওয়ার কোনো তথ্য নেই। মৌখিকভাবেও কিছু জানায়নি। কেন্দ্রীয় সভাপতি-সেক্রেটারি থেকে ইস্তফা নিয়েছে কিনা সে বিষয়েও জানা নেই। আমরা নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রলীগের কমিটিতে থাকলেও অন্য কমিটিতে থাকা যায়, তবে সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে আবার ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসার ক্ষেত্রে বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়। তবে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।