শিক্ষা ক্যাডারের বৈষম্য নিরসনের আহবান ঢাকা কলেজ শিক্ষকদের
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বেতন বৈষম্য এবং নানামুখী সংকট দূর করার আহবান জানিয়ে র্যালি করেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষকরা।বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের আয়োজনে শহীদ মিনারের সামনে থেকে মূল ফটক পর্যন্ত এই র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
'শিক্ষার পরিবর্তন শিক্ষক দিয়ে শুরু হয়’ স্লোগানে বিশ্বশিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এই র্যালিতে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
এসময় শিক্ষকরা বলেন, বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষকদের কাজের দিকে শ্রদ্ধা ও সন্মান প্রদানের দিন। এই দিনে বিশ্বভরে শিক্ষকদের প্রশংসা ও অভিবাদন জানানো হয়। কেননা শিক্ষকের ভূমিকা শিক্ষা ও সমৃদ্ধির প্রতি অমূল্য। একটি সমৃদ্ধ দেশ গঠনের জন্য শিক্ষকদের নানামুখী সংকট দূরীকরণ গুরুত্বপূর্ণ।
র্যালি শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ঢাকা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক পারভীন সুলতান হায়দার বলেন, বিশ্ব শিক্ষক দিবস প্রতি বছর ৫ অক্টোবরে পালিত হয়। আসলে শিক্ষকের মর্যাদা কোন নির্ধারিত দিবস বা মাপক যন্ত্র দিয়ে নির্ণয় করা যাবেনা। কেননা তাদের হাত ধরেই একটি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে ওঠে। সকল ক্ষেত্রেই সর্বাগ্রে শিক্ষকের মর্যাদা গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্মানজনক হওয়া উচিৎ। কেননা তারা শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয় এবং তাদের আত্মবিশ্বাস ও জ্ঞান বাড়াতে সাহায্য করে।
সরকারিভাবে প্রথমবারের মতো শিক্ষক দিবস উদযাপন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অনুপ্রাণিত করেছ উল্লেখ করে শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ড. মো. আবদুল কুদ্দুস সিকদার বলেন, প্রথমবারের মতো ভিন্নমাত্রায় শিক্ষক দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। এজন্য আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী প্রতি কৃতজ্ঞ। এটি অত্যন্ত আনন্দের যে রাষ্ট্রীয়ভাবে শিক্ষকদের স্মরণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, একইসাথে শিক্ষকদের মধ্যে যে অসন্তোষ রয়েছে সেগুলো দূর করাও খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। কারণ শিক্ষকরাই একটি জাতিকে গড়ে তোলেন। কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের যে সকল সুযোগ সুবিধা প্রয়োজন সেগুলো সরকার নিশ্চিত করবে এটি আমরা চাই।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে শিক্ষকদের যেমন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তেমনটি সম্ভব না হলেও অন্তত নূন্যতম সুযোগ টুকু তৈরি করে দেওয়া উচিত। যেমন আমরা বলতে পারি, বেতন বৈষম্য আমাদের জন্য একটি বড় দিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের সাধারণ শিক্ষা কার্ডের কর্মকর্তাদের বেতন বৈষম্য সমাধান করা উচিত। কারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ চতুর্থ গ্রেডের উপর কোন অবস্থান নেই। প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য ক্যাডারে এরকম অবস্থানেই তাই আমরা চাই এসব বৈষম্য দূরীকরণ করে পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া হোক।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি ঢাকা কলেজ ইউনিটের সম্পাদক হয়েছেন ড. মোঃ দিললুর রহমান, শিক্ষক পরিষদ কোষাধ্যক্ষ ওবায়দুল করিম রিয়াজ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নুরুন নাহার, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক সেলিনা আক্তার, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কাশেম মুহাম্মদ জহুরুল হক, সহকারী অধ্যাপক পল্লবী দে, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন, দক্ষিণায়ন ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক কাজী জাহাঙ্গীর আলম, আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক শফিকুল শরিফুল ইসলামসহ অন্যান্য শিক্ষকরা।