ডেঙ্গু প্রতিরোধে উদাসীন বিএম কলেজ প্রশাসন, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা
বিএম কলেজের আবাসিক হলগুলোতে প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থী বাস করলেও কোথাও ডেঙ্গু প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ এবং সচেতনতামূলক পোস্টার নেই। যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ও খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ ফেলা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দাবি থাকলেও মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংসে পুরো ক্যাম্পাসের কোথাও নেই কোনো উদ্যোগ। এসব ব্যাপার নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সারাদেশ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু জ্বর। প্রতিদিন মারা যাচ্ছে মানুষ। সরকারি হিসেব মতে রাজধানী ঢাকার পর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের হার সবচেয়ে বেশি বরিশাল ও চট্টগ্রামে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে উদ্যোগী হবার কথা বলা হলেও এখনো উদাসীন বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ প্রশাসন।
প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর এ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই সচেতনতার কোনো বালাই। ডেঙ্গু ঝুঁকিতে থাকা শিক্ষার্থীরা ফুঁসছে চরম ক্ষোভে। কলেজ প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
এ দিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে মশা নিধন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং মাউশির নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু আজ বুধবার পুরো কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে কোনো ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা মূলক কার্যক্রম চোখে পরেনি।
ফ্লাইট সার্জন ফজলুল হক মুসলিম হলের মো. আকাশ নামে এক আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, সারাদেশের অনেক মানুষ যখন ডেঙ্গুর ভয়াল গ্রাসের করণে আতঙ্কে রয়েছে এবং ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েও যেখানে হিমসিম খাচ্ছে। তখন কলেজ প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। আমরা আশাবাদী প্রশাসন অতি দ্রুত ডেঙ্গু প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন, ময়লা- আবর্জনা ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার করবেন এবং জনসচেতনতা সৃষ্টিতে পদক্ষেপ নিবেন।
মহাত্মা অশ্বিনী কুমার ডিগ্রী হলের রাকিবুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী জানান, দেশে প্রতিনিয়ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ইতোমধ্যে কলেজের অনেক শিক্ষার্থী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন ডেঙ্গু প্রতিরোধে বা এডিস মশা নিধনে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না; এটা হতাশাজনক।
মাউশি এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা কলেজ প্রশাসন পেয়েছে কিনা এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিএম কলেজ প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়ার মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেন নি।
তবে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার ডিগ্রী হলের সহকারী তত্ত্বাবধয়ক মো. মুস্তাফিজুর রহমান জানান, বিএম কলেজের চারপাশ কলেজের তুলনায় উঁচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই কলেজের মাঠ-ঘাট ও হোস্টেলগুলোর পাশের ড্রেন গুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা যায়। কলেজের বাহিরের ড্রেন গুলো অপরিষ্কার থাকায় কলেজের ভিতরের পানি নামতে পারে না ফলে কলেজের মধ্যে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এমতবস্থায় মশা নিধনে ঔষধ দিলে কোনো কাজ হবে বলে মনে হয় না। তবে কলেজের মাঠ-ঘাট, হোস্টেল গুলোর আসপাশে জমে থাকা পানি নেমে গেলে আমরা দ্রুত ডেঙ্গু প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।