কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কাশফুল
শরতের আগমনে বর্ষাঋতূকে বিদায় জানিয়ে এখন কাশফুলের সমারোহ। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আকাশে সাদা মেঘের ভেলার সঙ্গে মাটিতে মৃদু বাতাসের মিতালীতে কাশফুলের দোল খাওয়া প্রকৃতিতে শুধুই মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে।
নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা শরৎ ছাড়া আর কে ভাসাতে পারে? তাইতো শরতের বন্দনায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিমোহিত হয়েছেন বারবার। তবে শরৎতের সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ কাশফুল। আর সেই শরতের শুভ্র-সাদা কাশফুলে সেজেছে পাহাড় ঘেরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। নীল আকাশের নিচে সাদা কাশফুল যখন বাতাসের দোলায় দুলতে থাকে তখন মনটাও যেন আন্দোলিত হয়। মনে হয় শ্বেতবসনা এক ঝাঁক লাস্য যেন নৃত্য করছে।
আর এভাবেই লাল-সবুজে পাহাড়ঘেরা ও প্রাকৃতিক সৌন্দযের ভরপুর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংলগ্ন মাথা উচু করে দোল খাচ্ছে শুভ্র সাদা এই কাশফুল। সেখানে প্রকৃতির নিয়মেই যেন তৈরি হয়েছে কাশফুলের বাগান। আর এই নজরকাড়া কাশফুলের হাতছানি মানুষের মনকে ভীষণভাবে কাছে টেনে নিয়ে যায়। এজন্য এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আনাগোনা বাড়ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে।
কাশবনের পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেখা মেলে নবীন একদল শিক্ষার্থীর সঙ্গে। ক্যাম্পাসের প্রকৃতি, নতুন করে শুরু হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় জীবনসহ নানা দিক নিয়ে কথা হয় প্রতিবেদকের সঙ্গে। কাশফুলের কথা উঠতে শুরু হয় নানা গল্প।
তারা মনে করেন, সবুজ অরণ্যের মাঝে পাহাড়ে পাহাড়ে ফুটে থাকা কাশফুল তাদের বিমোহিত করেছে। শহর-নগরের বিপ্লবের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার প্রকৃতির রঙ। তবে এখনও নানা ক্যাম্পাসের পাহাড়গুলোতে দেখা মেলে রং-বেরঙের ফুলের, যা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাশফুল দেখেই ধারণা করতে পারছেন বলে জানান তারা। তাদের কথায় এটি এক নতুন ও রোমাঞ্চকর উন্মাদনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসপ্রিয়া আক্তার বলেন, শরৎ সেজেছে কাশফুলে থরে-বিথরে বালুচরে! সাদা মেঘের শতদল উড়ছে অপরূপা নীলাম্বরে! ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। দুইমাস পর পরই আমাদের দেশে ঋতূর পরিবর্তন হয়।
তিনি বলেন, এই ঋতূ পরিবর্তনে এখন বইছে শরৎকাল। নাগরিক কোলাহল আর যাপিত জীবনের নানা ব্যস্ততার মধ্যে চুপিচুপি আসে শরৎ। আর প্রকৃতিতে যখন শরৎকাল আসে তখন কাশফুলই জানিয়ে দেয় শরতের আগমনী বার্তা। শরতের বিকালে নীল আকাশের নিচে দোলা খায় শুভ্র কাশফুল।
কাশফুল ঘাসজাতীয় জলজ উদ্ভিদ। কাশফুলের মঞ্জুরি দন্ড ১৫ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার লম্ব হয়ে থাকে, বীজে সুক্ষ্ম সাদা লুম থাকে। কাশ উদ্ভিদ প্রজাতির, উচ্চতায় তিন মিটার থেকে ১৫ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। আর শেকড় গুচ্ছমূল থাকে। পাতা রুক্ষ ও সোজা।