দেড় বছর পর ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ-নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হচ্ছে
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তবে তদারক সংস্থাটির বেঁধে দেয়া শর্ত মেনে আগামীতে সকল প্রকার নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। এর ফলে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়টির সব ধরনের নিয়োগ, পদোন্নতি ও চাকুরি স্থায়ীকরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
সম্প্রতি কমিশনের সর্বশেষ নিয়মিত সভায় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিগগির চিঠি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে এ বিষয়ে অবগত করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ২২ মার্চ ইউজিসি থেকে এক পত্রের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টির তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহর ১০ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য অভিযোগ তদন্তের জন্য সেখানে নিয়োগ, পদোন্নতি ও চাকুরি স্থায়ীকরণসহ সকল প্রকার নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
ওই পত্রে উল্লেখ করা হয়েছিল নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত করার নিমিত্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত পত্রের প্রেক্ষিতে কমিশন কর্তৃক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং তদন্ত কার্যক্রম চলমান। কমিটি অতিশীঘ্রই প্রতিবেদন দাখিল করতে যাচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পূর্বে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত নিয়োগ/পদোন্নতি/চাকুরী স্থায়ীকরণসহ সকল প্রকার নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
আরও পড়ুনঃ দাখিল-আলিমের পর মাদ্রাসা ছাড়েন ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী
পরে এই অভিযোগের বিষয়ে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত যৌথ তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ ও সদস্য ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম-সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান। কমিটির তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। গত ১৯ জুন তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া এই প্রতিবেদনে প্রমাণিত অভিযোগগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে সুপারিশের আলোকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগকে অবহিত করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তবে তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে জানিয়েছে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ কামরুল। তিনি বলেন, আমাদের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি তোলা হয়েছে, সিন্ডিকেট কিছু বিষয়ে জানতে চেয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনো দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আগামী সিন্ডিকেটে বিষয়টি পুনরায় আলোচনা করা হবে।
আরও পড়ুনঃ কওমি মাদ্রাসায় বিদেশি শিক্ষার্থী বাড়ছে
এদিকে, সম্প্রতি কমিশনের সর্বশেষ সভায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই ইউজিসি থেকে চিঠি দিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি অবগত করা হবে। তবে আগামীতে যেকোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার আগে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ইউজিসির অনাপত্তি নিতে হবে বলেও কমিশনের সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
নিয়োগ-নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান জানান, কমিশনে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এখনো সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয়া হয়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। তিনি বলেন, কমিশনের সর্বশেষ সভায় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।