১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:২২

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিংয়ে খুলনা বিভাগের শীর্ষ ৯ কলেজ

সরকারি ব্রজলাল কলেজ শিক্ষার্থী  © সংগৃহীত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিংয়ে জায়গা করে নিয়েছে খুলনা বিভাগের শীর্ষ ৯টি কলেজ। ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এক প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান এ র‌্যাংকিং প্রকাশ করেন। র‌্যাংকিংয়ে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বিভাগের সরকারি ব্রজলাল কলেজ।

তালিকায় স্থান পাওয়া খুলনার বাকি শীর্ষ ৮টি কলেজ হলো- সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ, সীমান্ত আদর্শ কলেজ, সীমান্ত আদর্শ কলেজ, যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, কুমিরা মহিলা ডিগ্রি কলেজ, ঝাউডাঙ্গা কলেজ, এম এস জোহা ডিগ্রি কলেজ ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ।

১. সরকারি ব্রজলাল কলেজ
কলেজটি সরকারি বিএল কলেজ নামে অধিক পরিচিত। এটি খুলনা বিভাগের অন্যতম প্রধান কলেজ। যা খুলনা শহরে দৌলতপুরে ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত। ১৯০২ সালের জুলাই মাসে খুলনার শিক্ষায় পৃষ্ঠপোষক শিক্ষানুরাগী শ্রী ব্রজলাল চক্রবর্তী (শাস্ত্রী) কলকাতার হিন্দু কলেজের আদলে ২ একর জায়গার উপর দৌলতপুরে হিন্দু একাডেমী নামে এটি প্রতিষ্ঠা করেন।

পরবর্তীতে হাজী মহম্মদ মহসীন ট্রাস্ট তার সৈয়দপুর এস্টেটের ৪০ একর জমি এই প্রতিষ্ঠানে দান করে এবং মাসিক ৫০ টাকা অনুদান বরাদ্দ করে। ১৯৬৭ সালের ১ জুলাই তারিখে সরকারি কলেজে রূপান্তর করা হয়। কলেজটিতে ২১টি বিষয়ে পাঠদান করা হয়।

এর মধ্যে ২১টি বিষয়ে স্নাতক পর্যায়ে এবং ১৬টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদান করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে প্রায় ৩৫হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে এবং প্রায় দুইশত শিক্ষক কর্মরত আছেন। কলেজটিতে ৫ টি ছাত্রাবাস ও ২টি ছাত্রীনিবাস রয়েছে। এছাড়াও কলেজটিতে ১টি প্রশাসনিক ভবন,৪টি একাডেমিক ভবন, ৪টি সরকারি ভবন ও ৩টি অন্যান্য ভবন রয়েছে।

২. সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ
সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা বিভাগের যশোর জেলা শহরের খড়কি এলাকায় অবস্থিত একটি স্নাতকোত্তর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় এটি যশোর কলেজ নামে পরিচিত ছিলো, যা ১৯৪১ সালে থেকে বর্তমানে এমএম কলেজ নামে পরিচিত হয়।

কলেজটিতে ১৭টি বিষয়ে অনার্স কোর্স ও ১৬টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। কলেজটিতে বর্তমানে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা প্রায় ১৬০ জন এবং অফিস স্টাফের সংখ্যা ১০৫ জন। এছাড়া বর্তমানে এখানে প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। কলেজটির বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার।

আরও পড়ুন: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিংয়ে রংপুর বিভাগের শীর্ষ ১০ কলেজ

৩. কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ
১৯৪৭ সালের ১ জানুয়ারি স্থানীয়দের উদ্যোগে কুষ্টিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় এই কলেজ। কলেজের ক্যাম্পসটি ৫ একর জায়গায় অবস্থিত। কলেজে রয়েছে পাঁচটি ভবন। বর্তমানে এই কলেজে ২২০০০ এর বেশি শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। কলেজ়ে রয়েছে একটি ছাত্রাবাস ও দুটি ছাত্রী হোস্টেল। বর্তমান কলেজে মোট ১৯টি বিভাগ রয়েছে।এর মধ্যে ১৭টি বিভাগে অনার্স কোর্স এবং ১১টি বিভাগে মাস্টার্স কোর্স চালু আছে।

৪. সীমান্ত আদর্শ কলেজ
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা সাতক্ষীরার অন্যতম প্রসিদ্ধ উচ্চ-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সীমান্ত আদর্শ কলেজ। সহ-শিক্ষার এ আদর্শ প্রতিষ্ঠানটি বিগত ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হবার পর ১৯৯৯ সালেই মাধ্যমিক ও উচ্চ-মমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোরের অনুমোদন প্রাপ্ত হয়।

৫. যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ
যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ যশোরে অবস্থিত একটি সামরিক কলেজ। কলেজটি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ১৯৬৯ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজে অধ্যাপনা এবং পরীক্ষার ফলাফল উচ্চ মানের জন্য বিখ্যাত।

কলেজটির বর্তমান শিক্ষার্থী প্রায় ৫,১০৭ জন। যশোর ক্যান্টনমেন্টের দক্ষিণ পূর্ব সীমান্তে, শহরের উপকণ্ঠে আরবপুর রেল ক্রসিং সংলগ্ন প্রায় ২০ একর জমির উপর কলেজটি অবস্থিত। কলেজটিতে ১০টি বিষয়ে অনার্স কোর্স ও ৫ বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে।

৬. কুমিরা মহিলা ডিগ্রি কলেজ
কুমিরা মহিলা ডিগ্রী কলেজ খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের উত্তরপাশ সংলগ্নে অবস্থিত। ১৯৯৩ সালের জুন মাসে প্রায় ৩ একর জমির উপর স্থাপিত এই কলেজের পথচলা শুরু হয়। বর্তমানে কলেজটি স্নাতক, পাশকোর্চে বিএ, বিএসএস, বি কম সহ বিএসসি পর্যন্ত অনুমোদিত।

৭. ঝাউডাঙ্গা কলেজ
সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলায় ১৯৬ শতক ভূমির উপর অবস্থিত ঝাউডাঙ্গা কলেজটি 1997 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে এটি অনার্স কোর্সের জন্য পলিটিকাল সায়েন্স, সোসাইলজি এবং ফিলোসফিতে সম্পৃক্ততা রয়েছে। বর্তমানে কলেজটিতে ১৫০০ এর বেশি ছাত্র এখানে অধ্যয়ন করছে। এছাড়া কলেজটিতে ডিগ্রিসহ ৯টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে।

৮. এম এস জোহা ডিগ্রি কলেজ
১৯৯৩ সালে আলমডাঙ্গা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী হারদী ইউনিয়নের হারদী গ্রামে আলমডাঙ্গা-হাটবোয়ালিয়া সড়কের পাশে বিশিষ্ট দানবীর মীর শামসুজ্জোহার দানে প্রতিষ্ঠিত হয় মীর শামসুজ্জোহা ডিগ্রি কলেজে। বর্তমানে কলেজটিতে স্নাতক সম্মান শ্রেণীতে ৬টি বিষয়সহ স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৪টি বিষয়ে পাঠদান কার্যক্রম চলমান।

এছাডাও বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৪টি বিষয়সহ বিএম টি শিক্ষা কার্যক্রম চলমান। কলেজটিতে বিভিন্ন শাখায় ৭০জন শিক্ষক  ও ২৫ জন দায়িত্বশীল কর্মচারী সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে কলেজ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে।

৯. চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ
চুয়াডাঙ্গায় শহরের অভ্যন্তরে সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে প্রায় ১৮ একর জমির উপর কলেজটি অবস্থিত। ১৯৬২ সালের ১ আগস্ট কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজর মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১২,৫৮৬ জন ও মোট শিক্ষক রয়েছেন ৭৪ জন। কলেজটিতে প্রায় ১৮টি বিষয়ে স্নাতক কোর্স চালু রয়েছে।