বেরোবি ক্যাম্পাস যেন ময়লার ভাগাড়, ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসনের
নানাবিধ সমস্যা ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়েই চলছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি)। ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় যেখানে সেখানে ময়লার স্তূপ জমে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে ক্যাম্পাসটি। দিনের পর দিন ময়লার স্তূপ পড়ে থাকলেও ভ্রুক্ষেপ নেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি মশার উপদ্রব ও দুর্গন্ধ বাড়ছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কবি হেয়াত মামুদ ভবনের সংযোগ সড়কের পাশে আবর্জনা ফেলায় ভোগান্তিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এমনকি নাকমুখ চেপে চলাফেরা করতে হয় শিক্ষার্থীদের। ক্যাম্পাসের কোথাও নেই ময়লা ফেলার নির্ধারিত জায়গা। চারটি পয়েন্টে ময়লা ফেললোও নেই সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ।
প্রশাসনের চরম উদাসীনতায় ৭৫ একরের এই ছোট ক্যাম্পাসটির অস্বাস্থ্যকর অবস্থা। আবর্জনা ফেলায় যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে ক্যাম্পাস। বঙ্গবন্ধু হলের পশ্চিমে, মুখতার ইলাহী হল ও লাইব্রেরির মাঝে, একাডেমিক ভবনগুলোর পেছনে। নানাবিধ অনুষ্ঠানের খাবারের প্যাকেট-উচ্ছিষ্ট, একাডেমিক ভবন ও ল্যাবের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।এসবে সৃষ্টি হচ্ছে মশা-মাছি ও কীটপতঙ্গ। ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ।
এদিকে দেশে চলছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারি-বেসরকারিভাবে চালানো হচ্ছে সচেতনতামূলক প্রচার। এই পরিস্থিতিতে বেরোবি ক্যাম্পাসে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় যেখানে-সেখানে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আবর্জনার ব্যবস্থাপনার বিষয়টি যথাযথ নজরদারিতে রাখত তাহলে এ ধরনের সমস্যা হতো না।এমন পরিস্থিতির সৃষ্টিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অবহেলা বলে মনে করছেন অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী বলেন,অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ পাঠদানে ব্যাঘাত হচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস হলো অন্য জায়গা থেকে আলাদা একটি পরিবেশ।সারা দেশে ডেঙ্গুর পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের এই বিষয়টা দ্রুত সমাধান ও যথাযথ নজরদারিতে রাখা উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার এ এম এম শাহরিয়ার জানান,মানুষের বায়ুবাহিত রোগ সাধারণত আবর্জনা থেকেই বেশি ছড়ায়। তিনি বলেন, এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শ্বাসকষ্ট, পেটের সমস্যা ডায়রিয়া ও আমাশয়ের মতো রোগের জীবাণু সহজেই ছড়াতে পারে।
নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা শাখার কর্মকর্তা হাফিজ আল আসাদ রুবেল বলেন,‘সমস্যার কথা যদি বলি কবি হেয়াত মামুদ ভবনের সামনের পয়েন্টটিতে একটু হয়ে থাকে। কারণ এই এলাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পদচারণ বেশি।আমরা এই পয়েন্টটি স্থানান্তরের বিষয়ে দ্রুতই পদক্ষেপ নেব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর শরিফুল ইসলাম বলেন,এ সমস্যা দূর করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রশাসনিক ভবন ও ছেলেদের হলের সামনে এবং হল ও প্রশাসনিক ভবনের মাঝখানে এই তিন স্থানে বড় আকারের ডাসবিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।