বৃহস্পতিবারও পরিবহন সেবা চায় কুবি শিক্ষার্থীরা
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতি বৃহস্পতিবার সশরীরে ক্লাস ও পরিবহন সেবা বন্ধ রেখেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জ্বালানি সাশ্রয় ও কৃচ্ছ্রসাধন নীতির আওতায় সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন সময়ে বৃহস্পতিবার পরীক্ষায় বসতে হয় শিক্ষার্থীদের। ফলে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবারও পরিবহন সেবা চালুর দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা যায়, ২০২২ সালের ২৩ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে জ্বালানি সাশ্রয় ও কৃচ্ছ্র সাধনে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্তের পর গেল বছরের ১ আগস্ট থেকে বৃহস্পতিবার ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও প্রশাসনিক, অ্যাকাডেমিক ভবন এবং হলসমূহের কক্ষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বন্ধ রাখা এবং লাইট-ফ্যান সীমিতভাবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। তবে শীতাতপ যন্ত্র ব্যবহারের সেই সিদ্ধান্ত মানছেন না খোদ প্রশাসনের নীতিনির্ধারকরাই। তবে পরিবহন সেবা থেকে এখনও বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ফি দিয়েও পরিবহনের সেবা পাচ্ছেন না তারা। এদিকে শিক্ষার্থীদের জন্য বৃহস্পতিবার বাস দিতে প্রশাসনের কাছে কয়েকবার আবেদন করা হলেও টনক নড়ছে না তাদের। এছাড়াও প্রতিবছর ভর্তির সময় শিক্ষার্থীরা এক হাজার টাকা পরিবহন ফি দিয়ে থাকেন। এই অর্থ কোন খাতে ব্যয় করা হয় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
এ বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি হয় তাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের অধিকাংশই টিউশন করে চলতে হয়। কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে আমাদের চলতে কষ্ট হয়। সেই জায়গা থেকে চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত।
লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রবিউল হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন যুক্তিতে বৃহস্পতিবারে স্ব-শরীরে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখছে সেটা জানি না। যদি অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকে তাহলে বিভিন্ন সময় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা কেন নেওয়া হয়? আমরা যেখানে প্রতিবছর পরিবহন ফি দিয়ে থাকি, সেখানে অতিরিক্ত খরচ করে কেন পরীক্ষা দিতে আসতে হবে। জ্বালানি সংকটের দোহাই দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা বন্ধ করা দরকার। প্রশাসন আসলে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।
এসব বিষয়ে নিজেদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই দাবি করে পরিবহন পুলের উপদেষ্টা ড. স্বপন চন্দ্র মজুমদার বলেন, এগুলো প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। আমরা শুধু দায়িত্ব বাস্তবায়ন করি।
এ বিষয়ে কিছু জানেন না দাবি করে পরিবহন পুলের উপদেষ্টা ড. স্বপন চন্দ্র মজুমদার জানতে পারেন বলে জানান রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী।
তবে শিক্ষার্থীদের সাথে একমত পোষণ করে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, তাদের সাময়িক সময়ে কষ্ট হচ্ছে সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের কষ্ট হয় এমন সিদ্ধান্ত আমাদের নেওয়া উচিত না। আমাদের বিকল্প পদ্ধতি খুঁজে বের করতে হবে। আমি বিষয়টি নিয়ে উপাচার্যের সাথে কথা বলে দেখবো।