উপাচার্য স্বেচ্ছাচারীভাবে নিজের মনমতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন: মাভাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) নিজস্ব স্থাপনার বাইরে ঢাকাস্থ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেনের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে মাভাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি।
রবিবার (১৩ আগস্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যয়'৭১-এর সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম সাইফুল্লাহ বলেন, শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাকর এবং অবমাননাকর। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বেচ্ছাচারীভাবে নিজের মনমতো যে কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ডিন, চেয়ারম্যান কারও কোনো কথার তোয়াক্কা করছেন না। আমার ধারণা উপাচার্য তার নিজের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ঢাকাস্থ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বোর্ড ডেকেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধাকে অগ্রাহ্য করেছেন এবং গত দুই বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য আমরা তার কোনো কর্মকাণ্ড দেখিনি।
এছাড়া এর আগে দুই বিভাগে চারজন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে উপাচার্য তার নিজ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছেন বলে জানান তিনি।
মানববন্ধনে মাভাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির নির্বাহী সদস্য এবং লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক বলেন, ২০ বছরের অধিক সময়ের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সব সময় নিয়োগবোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়েছে। আজ যে নিয়োগ বিশ্ববিদ্যালয়ে হওয়ার কথা ছিলো সেটি উপাচার্য নিজের স্বার্থকে চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে গেছেন। এর আগে তিনি শিক্ষকদের ব্লাডি বলেছেন এবং বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন পুরুষ আছে বাকি সব মহিলা; এমন আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে তার এই পদে থাকার নৈতিকতা কতটুকু?
এসময় সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এই নিয়োগবোর্ড থেকে নিজেকে বিরত রেখেছি কারণ আমার আত্মসম্মানবোধ আছে কিন্তু মাননীয় উপাচার্যের আত্মসম্মানবোধ নেই।
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির নেতারাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, এক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়ার বিষয়টি গত মঙ্গলবার প্রথম সামনে আসে। তখন এ বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে দেয়া বক্তব্যে নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং প্রার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন মাভাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেন। সেই সাথে শিক্ষক সমিতির কড়া সমালোচনাও করেন তিনি।
এর ধারাবাহিকতায় শনিবার (১২ আগস্ট) অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করায় নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক।
জানা গেছে, মাভাবিপ্রবির বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি (বিএমবি) বিভাগ এবং ফার্মেসি বিভাগে ৩ জন করে মোট ৬ জন প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া হবে। শিক্ষক নিয়োগের এই পরীক্ষা ১৩ ও ১৪ আগস্ট সকাল ১০টায় শেকৃবির প্রশাসনিক ভবনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মাভাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ।